জুমবাংলা ডেস্ক : পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে শুধু মাদারীপুরেই ২৭৩ বিঘা জমির তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কেনা এসব জমির দলিল মূল্য ১০ কোটি টাকার বেশি। দুদকের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার এসব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের নামে কেনা রাজধানীর গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটও ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ও সিনিয়র বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন। দুদকের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাহমুদ হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরে তাঁর আরও সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। সেই সব সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে দুদক গতকাল আদালতে আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা সব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে মাদারীপুরের রাজৈর থানায় ১১৩টি দলিলে ২৭৩ বিঘা জমি রয়েছে। এসব জমি ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে কেনা হয়েছে। এসব জমির দলিল মূল্য ১০ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান এলাকায় জীশান মির্জার নামে তিনটি ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে; যার একেকটি দুই হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের। পাশাপাশি বেনজীরের ছোট মেয়ে জাহারা জেরিন বিনতে বেনজীরের নামেও একটি ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে একই আয়তনের। একই ভবনে ১৩ ও ১৪ তলায় সাবেক এই আইজিপির স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা চারটি ফ্ল্যাটের দলিল মূল্য সোয়া দুই কোটি টাকার বেশি। আদালত গতকাল এসব ফ্ল্যাটও ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা অস্থাবর সম্পদ এবং ব্যাংকের অর্থও ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এসবের মধ্যে রয়েছে—সোনালী ব্যাংকের ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, স্ত্রী জীশান মির্জার নামে শান্তা সিকিউরিটিজে বিও অ্যাকাউন্ট, লঙ্কা সিকিউরিটিজে বিও অ্যাকাউন্ট, সাভানা ন্যাচারাল পার্ক নামের একটি কোম্পানির শতভাগ শেয়ার, সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেডে শেয়ার, সাভানা ইকো রিসোর্টে শতভাগ মালিকানা, একটি শিশির বিন্দু কোম্পানিতে শতভাগ মালিকানা।
এ ছাড়া দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা অন্তত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আংশিক শেয়ার ফ্রিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে আরও সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেলে সেগুলো ক্রোক এবং অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি জব্দ (ক্রোক) এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে তাঁদের নামে থাকা ৩৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।