লাইফস্টাইল ডেস্ক : সারা বছর চোখে পড়লেও শীতের সময় ভুট্টা পোড়ানো খেতে বেশ লাগে। ফেরিয়ালার কাছ থেকে ভুট্টা পোড়ানো খেতে খেতে কখনও কি মনে হয়েছে, এখান থেকে দেহের জন্য উপকারী যাবতীয় পুষ্টি গ্রহণ করছেন!
তাইতো ভারতীয় পুষ্টিবিদ একতা সিংঘাল বলেন, “ভুট্টা মজাদার আর স্বাস্থ্যকর নাস্তা হিসেবে অনন্য। এতে আছে আঁশ, কার্বোহাইড্রেইট ও প্রোটিন।”
হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও জানান, এই শষ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়া, ফসফরাস ও পটাসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। আরও রয়েছে ভিটামিন এ, বি এবং সি।
সিংঘাল বলেন, “ভুট্টা অত্যাবশ্যকীয় আঁশ, ভিটামিন ও খনিজের ভালো উৎস যা সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।”
হজম স্বাস্থ্য উন্নত করে: ভুট্টার আঁশ হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় ও পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হ্রাস পায়।
হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখে: ভুট্টাতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরেওলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
শক্তি বাড়ায়: ভুট্টাতে থাকা কার্বোহাইড্রেইট দেহে দ্রুত শক্তি যোগায়। তাই পরিশ্রমী ব্যক্তিদের জন্য এটা বেশি কার্যকর।
দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে: ভুট্টাতে আছে লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়সের সাথে সাথে দৃষ্টি শক্তি কমে বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে: ভুট্টাতে থাকা আঁশ পেট ভরা রাখে যা নাস্তা হিসেবে খাওয়া যায়। ফলে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে আর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে।
ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে: ভুট্টাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বেশি থাকায় ত্বক সুন্দর করতে সহায়ক। যে কারণে বয়সের ছাপ কমাতেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে: এতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
রক্তশূণ্যতার ঝুঁকি কমায়: ভুট্টাতে আছে লৌহ। রক্ত স্বল্পতা আছে এমন ব্যক্তিদের জন্য এটা উপকারী।
ভুট্টা খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপায়
ভুট্টা সেদ্ধ, ভাজা বা পোড়ানো- যে কোনো উপায়েই খাওয়া যায়। তবে স্বাস্থ্যকর উপায়গুলো হল-
প্রক্রিয়াজাতভাবে না খাওয়া: বাজারে নানান আকর্ষণীয় মোড়ক বা টিনে ভুট্টা পাওয়া যায়। প্রক্রিয়াজাত ভুট্টার চেয়ে তাজা ভুট্টা বেশি উপকারী।
রান্নার সঠিক উপায়: সেদ্ধ, রোস্ট, গ্রিল্ড বা ভাপানো- যে কোনো পন্থায় ভুট্টা খাওয়া যায়। কেবল ভাজা ভুট্টা এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে কোনো পুষ্টিমান অবশিষ্ট থাকে না।
স্বাদ বড়ানোর উপকরণে সাবধানতা: ভুট্টার সাথে বাড়তি মাখন, মরিচ গুঁড়া বা লবণ যোগ করা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। এতে ওজন বাড়ে ও হৃদ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরে। তাই ‘সিজনিং’ হিসেবে এসবের পরিবর্তে মসলা বা ভেষজ ব্যবহার করা যায়।
ভুট্টা খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ভুট্টা পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেন, পুষ্টিবিদ একতা সিংঘাল। খুব বেশি ভুট্টা খাওয়া হলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
রক্তের শর্করা বাড়ায়: ভুট্টাতে আছে শ্বেতসার যা রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায়। ডায়াবেটিস রোগীদের ভুট্টা খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত।
পেট ফোলাভাব: আঁশ অন্ত্র সুস্থ রাখে। তবে খুব বেশি খাওয়া পেট ফোলাভাব ও গ্যাস সৃষ্টি করে। দেহে আঁশ জমাট বাঁধতে পারে না তাই এমনটা হতে পারে।
বাড়তি ক্যালরি: অতিরিক্ত ভুট্টা খাওয়া দেহে বাড়তি ক্যালরি জমায়। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটা ঝামেলাজনক।
অ্যালার্জি: যদিও এর সংখ্যা কম, তবে কারও কারও ভুট্টাতে অ্যালার্জি থাকতে পারে বলে জানান, সিংঘাল। ফলে লালচেভাব, চুলকানি, ত্বক ফুলে ওঠা, বমি, ডায়রিয়া ও সর্দির মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
ছবি: এঞ্জিন আকিয়ার্ট, পেক্সেল ডটকম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।