জুমবাংলা ডেস্ক : টানা কয়েক দিনের তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। বৃহস্পতিবারের মতো আজও (শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল) দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। আগামী এক সপ্তাহে তাপমাত্রা কমার কোনো আভাস নেই, সম্ভাবনা নেই বৃষ্টিরও। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের দিন বা ঈদের পর বৃষ্টি হতে পারে।
ফলে সহসাই তীব্র এ তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তির কোনো সুখবর নেই। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে দেয়া সবশেষ তথ্যে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৈশাখের প্রথম সপ্তাহজুড়ে গরমের এ দাপট থাকবে। আগের দিনের চেয়ে এদিন বেশি গরম অনুভূত হবে। এরপর মেঘের দেখা মিলতে পারে।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এছাড়া আগের দিন রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, বাগেরহাট, মানিকগঞ্জ ও ফরিদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে।
সাধারণত কোনো এলাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে সেখানে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ অতিক্রম করলে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে বলে ধরা হয়। ঢাকায় বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা রয়েছে; আর সাত জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।
মূলত ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ শহর এলাকায় জলাভূমি কমে যাওয়ায় এবং গাছপালা কম থাকায় গরমের অনুভূতি এতো বেশি মনে হচ্ছে। ঢাকাসহ বড় শহরের ভবনগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের অত্যধিক ব্যবহারে গরম আরও বাড়ছে। এছাড়া, সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশে গাছপালা কম থাকায় রোদে পিচ উত্তপ্ত ও কংক্রিটের ভবনে উত্তাপ জমে তাপ স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়ছে।
তাপপ্রবাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা
এদিকে টানা তাপপ্রবাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। জেলায় টানা ১২ দিন থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে জনজীবন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ধান ও অন্যান্য সবজি। কাজ কম তাকায় বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বেড়ে চলছে রোগবালাই।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় মার্চ ও এপ্রিল মাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মার্চে গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে তাপমাত্রা আরও বেড়েছে। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।’
অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। জেলা সদরের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী রোগীর সংখ্যা। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস থেকে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি খেতে বলা হচ্ছে। লেবুর শরবত ও স্যালাইন খাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এরপর ১২দিন একটানা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হচ্ছে। গত ৩ এপ্রিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে প্রতিদিন ক্রমান্বয়ে বেড়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।