জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই বিএনপি এই মূহুর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। এছাড়া রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে ফ্যসিবাদের দোসররা যেনো সুযোগ নিতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সে প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দেয়া এক বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সম্প্রতি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেন কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ হয় এদিন। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের সাথে বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। তাঁরা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন র্যাব ডিজি এ কে এম শহিদুর রহমান ও ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এতে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন আহত হন। পরে এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কাছ থেকে ঘোষণা আসার পরই বঙ্গভবনের সামনে থেকে সরতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ইস্যুর আলোচনা শুরু হয় সম্প্রতি মানবজমিনের প্রকাশনা জনতার চোখের এক প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশের পর। এতে দৈনিকটির প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপতি তাকে জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন, যা শপথ ভঙ্গের শামিল।
অবশ্য সমালোচনা ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়। রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে সোমবার বঙ্গভবনের পাঠানো এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার উপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্টের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।’
রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎকার নেয়া মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অসত্য কথা বলেননি। সোমবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘আসল ঘটনাটা কি সেটা জানার চেষ্টা করেছি আমি, অনেকদিন। তারপর প্রেসিডেন্ট (রাষ্ট্রপতি) সাহেবের সাথে কথা বলেছি। প্রেসিডেন্ট সাহেব যা সত্য তাই বলেছেন। এখানে ষড়যন্ত্রেরও কিছু নেই আর প্রেসিডেন্ট অসত্য কথা বলেছেন বলেও তো আমার মনে হয় না। তিনি তো পরিষ্কার বলেছেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। ওই রিপোর্টেও কিন্তু তিনি নিজেই বলেছেন যে, এটা মীমাংসা হয়ে গেছে। সেটাও ছাপা হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।