মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকের বিরুদ্ধে নিজস্ব বাহিনী নিয়ে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বেতিলা মৌজার প্রায় ২৫ শতাংশ জমি নিয়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকসহ পাঁচজনকে আসামী করে গত ১৮ আগস্ট আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী মো. আলমাস উদ্দিন দেওয়ান।
বৈধ মালিকানা সূত্রে ভোগদখলকারী তোরাব আলী দেওয়ান ও আছিয়া খাতুনের উত্তরাধিকারীরা অভিযোগ করেছেন, সদর উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের জমি দখলের চেষ্টা করছেন। এতে এলাকায় অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে মোহন সিংহের কাছ থেকে নরেন্দ্র নাথ ঘোষ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে তোরাব আলী দেওয়ান ও আছিয়া খাতুন জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। মৃত্যুর পর তাদের উত্তরাধিকারীগণ নিয়মিতভাবে জমি ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু আর.এস রেকর্ডে ভুলক্রমে অন্যের নামে নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় মালিকপক্ষ মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত মালিকদের পক্ষে ডিক্রী প্রদান করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, আদালতের রায় অমান্য করে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকসহ তার সহযোগীরা জবরদখলের চেষ্টা করছেন এবং ঘরবাড়ি নির্মাণেরও হুমকি দিচ্ছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের লোকের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। কেউ কিছু ন্যায়ভাবে বলতে গেলে তাকে হামলা মামলার হুমকি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ থেকে শুরু করে প্রাণণাশের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছেন। ঐ এলাকায় মাটি ব্যাবসা থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের নেতাদের শেল্টার দিয়ে তার ছেলে টুটুল একসাথে বিভিন্ন ব্যবসা করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এমনকি বাংলা টিভির মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক অহিদুর রহমান রানা’র নামে হামলা-মামলারও হুমকি দিয়েছে বলে জানা যায়।
মামলার বাদী মুহাম্মদ আলমাস উদ্দিন দেওয়ান বলেন, “ফজলুল হক আমার জায়গা থেকে একটি কাঁঠাল গাছ ও ১০টি বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। জায়গার ভেতরে খুঁটি দিয়ে বেড়া দিয়েছে। আমি সার্ভেয়ার নিয়ে গেলে মাপ দিতে দেয়নি। প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধরের হুমকি দিয়েছে।”
এ অবস্থায় মালিকরা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ফজলুল হক এবং অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছে মোশারফ, আকাশ, মনির ও দেলোয়ার সহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, “যদি কেউ এমন কাজ করে থাকে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ রয়েছে— কোন জমি দখল, চাঁদাবাজি বা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের দলীয় সকল পর্যায় থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।