জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনদিন আশ্বিনা আমের চাহিদা বাড়ছে। প্রযুক্তি আর চাষের কৌশলগত কারণে টক স্বাদের আশ্বিনা আমে বেড়েছে মিষ্টতা। আম চাষিদের দাবি, ৫-৭ বছর পূর্বে আশ্বিনা আমের দাম পাওয়া যেতো না। এখন বাড়তি যত্ন করে আমের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
মৌসুমের শেষ আম আশ্বিনা। বাজারে এখন শুধু আশ্বিনা আমই বিক্রি হচ্ছে। সরজমিনে কানসাটের আম বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এর আগের বছর গুলোতে বাজারে এ আম কম পরিমাণে বিক্রি হতো। এখন বেশি পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। দামও চড়া।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষিসম্প্রসারণের তথ্য মতে, জেলায় ২৪ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে ৭ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৫ গাছে আশ্বিনা আমের চাষাবাদ করছেন চাষিরা। জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে এ আমের চাষাবাদ হচ্ছে। এখানে ৫ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ গাছে আশ্বিনা আবাদ হচ্ছে।
জয়নাল আবেদিন নামের এক আম ব্যবসায়ী বলেন, ‘এ বছরে বৃষ্টি বাদল কম। বর্ষার মৌসুমে আশ্বিনা আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু এ বছর ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ খুব কম। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে বেশিদিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে আশ্বিনা আম।’
আশরাফুল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে এ জেলার মানুষ আশ্বিনা আমের যত্ন নিতো না। আশ্বিনা আম টক হওয়ায় আচার অথবা জুসের জন্য বিক্রি করে দিতো আম চাষিরা। এখন বেশি বেশি পরিচর্যা করছেন চাষিরা। আগে বৃষ্টি বাদলের কারণে বেশি পরিমাণে আম নষ্ট হতো, এখন আশ্বিনা আমে ফ্রুড ব্যাগিং করায় কম নষ্ট হচ্ছে। আর বাজারে এ আমের চাহিদা বেড়েছে।’
আম ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপদ আম উৎপাদনের কারণে আমে ফ্রুড ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। আশ্বিনা আমে ফ্রুড ব্যাগ ব্যবহার করলে, আকার আকৃতি বাড়ে। আমে পোকা মাকড় থেকে রক্ষাও পাওয়া যায়। ব্যাগের কারণে আমের গায়ের রং সবুজ থেকে বাদামি রঙের হয়। যার ফলে আমের গায়ের রঙ আর স্বাদে অতুলনীয়।’
কানসাটের আম বাজারে ৫ মণ আশ্বিনা আম বিক্রি করতে এসেছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘মৌসুমের শেষ দিকে বাগানে আশ্বিনা আম পাওয়া যায়। গত বছর আশ্বিনা আম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা মণ দরে। এ বছরের সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’
কানসাট আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, ‘আমের মৌসুম প্রায় শেষ। বাজারে অন্য কোন আম নেই। এখন আশ্বিনা আম পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ খাওয়ার জন্য প্যাকেটের আম বেশি কিনছে। আগে আশ্বিনা আমের বাজার ভালো ছিল না। এখন এ আম বেচা বিক্রি ভালো হচ্ছে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমে সাদা ফ্রুড ব্যাগ ব্যবহার করলে আমের রঙ পরিবর্তন হবেনা।আমের অরিজিনাল স্বাদ থাকবে, মিষ্টির কোন পরিবর্তন হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি আশ্বিনা আমের রঙ বদল করতে চাই তাহলে; বাদামি রঙের ফ্রুড ব্যাগ ব্যবহার করলে আমের গায়ের রঙ বদল হবে। মূলত ওই ব্যাগের ভিতরে কার্বন পেপার থাকার কারণে আমের গায়ের রঙ বদলে যায়। এ ব্যাগ ব্যবহারের ফলে ক্ষতিকর পোকা মাকড় থেকে আমকে রক্ষা করা যাবে। তবে এ ব্যাগ ব্যবহারে আমের স্বাদ কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।