জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে স্বর্ণ ও টাকা চুরি করা দেখে ফেলায় বোনের শাশুড়িকে হাত-পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করেন মাদ্রাসাশিক্ষক তারিফ হোসেন (৩০)। তিনি একাই এই হত্যার ঘটানার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারক্তি দেওয়ার কথা জানায় পুলিশ।
আজ শুক্রবার দুপুরে মিরসরাই থানা পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি তারিফ হোসেনকে লুণ্ঠিত স্বর্ণ, টাকাসহ গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত করে।
পুলিশ জানায়, আসামি তারিফ হোসেন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকা ও স্বর্ণের জন্য একাই খুন করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুড়ি, জামা কাপড়, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, সাজেদা আক্তারের (৫৫) মেয়ে আয়শা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি তারিফ হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাফিফ হোসেন উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মৌলভী নজির আহমদ আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপারেন্টেন্ড হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি একটি মসজিদের খতিব।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে বাসার আলমিরা থেকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, একটি সিটিগোল্ডের সীতা হার (মূল্য অনুমান-১৫ হাজার টাকা), একটি ১ ভরি সোনার চেইন (মূল্য অনুমান- ১ লাখ টাকা), এক জোড়া ৫ আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুলসহ (মূল্য ৩০ হাজার টাকা) মোট প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামামাল লুট করেন তারিফ হোসেন। এ ঘটনা দেখে ফেলায় বোনের শাশুড়ি সাজেদা আক্তারকে জবাই করে হত্যা করেন তারিফ।
মিরসরাই থানার পুলিশ কর্মকর্তা দীপ্তেশ রায় জানান, আসামি তারিফ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটান। লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে তার কর্মস্থল জোরারগঞ্জ নজির আহম্মদ দাখিল মাদ্রাসায় চলে যান। সেখানে রক্তমাখা চুরি, লুণ্ঠিত মালামাল রেখে রক্তাক্ত জামা পরিবর্তন করে ঘটনাস্থলে সমবেদনা জানাতে আসেন। স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, চুরির সময় তার বোনের শাশুড়ি সাজেদা আক্তার দেখে ফেলায় তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় সাজেদা ফ্লোরে পা পিছলে চিৎ হয়ে পড়ে যান এবং মাথায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে চিনে ফেলায় বোনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ধরা পড়ার ভয়ে অজ্ঞান অবস্থায় হাত-পা বেঁধে জবাই করেন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সাজেদার স্বামী মামুন চৌধুরী (৬৫) সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠতে দেখেন তিনি। এ সময় তিনি তৃতীয় তলায় উঠে যান। মামুন চৌধুরী যখন বাসায় প্রবেশ করেন, তারিফ হোসেন দরজার বাইরে দিয়ে সিটকিনি দিয়ে নিচে নেমে তার জন্য অপেক্ষমাণ বন্ধু শাহাদাতকে নিয়ে মোটরসাইকেলে চলে যান। এক ঘণ্টার মধ্যে পুরো কিলিং মিশন শেষ করেন।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনা শুনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে গোয়েন্দা সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।