স্পোর্টস ডেস্ক : সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যে টুইট নিয়ে বুধবার বিকেলে পুরো ভারত তোলপাড় চলছিল তা কি সত্যি নাকি বিজ্ঞাপনী চমক? আসল বিষয় হলো তিনি একটি রিয়েল এস্টেট বিজ্ঞাপনের ব্র্যান্ড দূত হয়ে কাজ শুরু করছেন।
দেশেজুড়ে আলোচনা চলছিল সৌরভ নাকি বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায় যেতে চলেছেন। সাথে বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন!
দেশজুড়ে এমনই হইচই পড়েছে। স্বয়ং অমিত শাহ ফোন করে সৌরভকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ব্যাপার কী?
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, সৌরভ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, বিষয়টির সাথে রাজনীতির কোনো সূত্র নেই।
বস্তুত সৌরভের এই ব্যাখ্যা আরো আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ সৌরভের ‘আলোড়ন সৃষ্টিকারী’ টুইটের তিন ঘণ্টা আগে করা একটি টুইট। যেখোনে লিখেছেন ‘সাফল্য কোনো গন্তব্য নয়, একটা যাত্রা।’ তার পরে রয়েছে, একটি রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নাম। সেখানে সৌরভ লিখেছেন, বিস্তারিত জানতে নজর রাখুন। সাথে হ্যাশ ট্যাগ দিয়েছেন, ‘লিভ টু উইন’ এবং ‘ব্র্যান্ড কোলাবোরেশেন’। সাথে রয়েছে, এক ঝাঁক উচ্ছ্বল তরুণ-তরুণীকে নিয়ে সৌরভের ছবি। আরো দেখা যাচ্ছে, ওই ‘লিভ টু উইন’ হ্যাশটাগেই সৌরভ মঙ্গলবার তার ইন্সটাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। কিন্তু সারাদেশ সে সব খতিয়ে দেখেনি। বিভিন্ন স্তরে জল্পনা শুরু হয়েছে সৌরভের রাজনীতির ইনিংস নিয়ে।
প্রসঙ্গত, সৌরভের কাছে রাজনীতিতে যাওয়ার প্রস্তাব আগেও ছিল, এখনো রয়েছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু সৌরভ সব প্রস্তাবের জবাবেই বলেছেন, ‘আপাতত’ তিনি রাজনীতিতে যেতে ইচ্ছুক নন। বরং তিনি চান অনেক বেশি করে ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে থাকতে। যে কারণে, বিসিসিআই সভাপতি হওয়া তার কাছে মন্ত্রী, সংসদ, বিধায়ক হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি পছন্দের।
সৌরভের রাজনীতিতে যোগদানের আলোচনা এর পরেও থামেনি। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। নৈশভোজের সেই আসরে হাজির ছিলেন বিজেপির আরো তিন নেতা। তখনই আলোচনার শুরু হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছিল সৌরভ কি তবে বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায় যেতে চান?
বুধবার আচমকা সৌরভ টুইটে নতুন অধ্যায় শুরুর কথা বলতেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে সেই নৈশভোজের কথা। তবে কি শাহের সাথে সে দিনই পরবর্তী ‘নতুন অধ্যায়’-এর রূপরেখা তৈরি হয়েছিল!
এই আবহে বুধবার বিকেলে সৌরভের টুইটের পরে এমনও রটে যায় যে, তিনি ইতোমধ্যেই বিসিসিআই সভাপতি পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন। এর পর তার গন্তব্য রাজ্যসভা এবং তা বিজেপির টিকিটে।
তবে ওই আলোচনা চলতে চলতেই সংবাদসংস্থা এএনআই বিসিসিআই সচিব তথা অমিত শাহের ছেলে জয় শাহকে উদ্ধৃত করে জানায়, এই খবর ঠিক নয়। সৌরভ আদৌ বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদ ছাড়েননি।
এখানে বলে রাখা ভালো, বিসিসিআই সভাপতি পদে সৌরভের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে। তার আগেই রাজনীতিতে যেতে পারেন সৌরভ। তিনি হতে পারেন বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসির চেয়ারম্যান। বুধবারের টুইটে অবশ্য তার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা নেই।
তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯২ সাল থেকে ৩০ বছর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত থাকার পর নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছেন। এ জন্য সকলের শুভেচ্ছা চান। পাশাপাশি জানিয়েছেন, তিনি যে কাজ করতে চলেছেন, তাতে অনেক মানুষের ভালো হবে।
এই ‘মানুষের ভালো’ হওয়ার বিষয়টির ফলেই রাজনীতিতে যোগদানের বিষয়টি আরো জোরালো হয়। তবে আবাসন গড়লেও মানুষের ভালোই হবে।
সৌরভের রাজনীতিতে যোগদানের আলোচনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেও ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে অনেকে দাবি করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সে খবর সত্যি হয়নি। এবারও আলোচনার জন্ম হতে না হতেই তাতে পানি ঢেলে দিলেন অন্য একটি টুইট।
সূত্র : আনন্দবাজার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।