বিকেলের ক্লান্তি ও শক্তিহীনতা এড়াতে সকালের খাবারের অভ্যাস ঠিক করা জরুরি। কারণ, দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হিসেবে পরিচিত ব্রেকফাস্টই দিনের শক্তি, মনোযোগ, মেজাজ এমনকি হজমেও প্রভাব ফেলে। তবে ভুলভাবে ব্রেকফাস্ট করলে সকালে ঠিক থাকলেও দুপুরের দিকে ক্লান্তি, পেট ফাঁপা বা খিদে বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

অদ্ভুত হলেও সত্যি—অনেক সময় মানুষ ‘স্বাস্থ্যকর ভেবে’ এমন কিছু অভ্যাস করে বসেন, যা আসলে শরীরের ছন্দ নষ্ট করে দেয়।
এই সাধারণ ভুলগুলো নিয়েই আলোচনা করেছেন পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ান ঋধিমা খামসেরা। তিনি জানান—এই অভ্যাসগুলো নিজেরা খারাপ নয়, কিন্তু সময় ভুল হওয়ার কারণেই এগুলো শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ মানুষ এগুলো করে বসেন দিনের সবচেয়ে ভুল সময়ে।
নিচে তিনি এমন ৫টি ‘স্বাস্থ্যকর অভ্যাস’-এর কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলো আসলে আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে—
সকালে অতিরিক্ত পানি খাওয়া
অনেকে মনে করেন—ঘুম থেকে উঠে একাধিক গ্লাস পানি খেলেই শরীরে ভালো প্রভাব পড়ে।
কিন্তু ডায়েটিশিয়ানের মতে, ঘুম থেকে উঠে একবারে তিন–চার গ্লাস পানি খেলে পেটের সেই প্রয়োজনীয় এসিড ধুয়ে যায়, যা রাতে হজমের জন্য তৈরি হয়। ফলে খাদ্য ভাঙার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং সহজেই পেট ফাঁপা শুরু হয়।
সমাধান : ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খান এবং ৩০ মিনিটের মধ্যে কিছু খেয়ে নিন।
সকালে ফলের রস খাওয়া
ফল পুষ্টিকর হলেও তার রস কিন্তু রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
ঋধিমা জানান, ফল ব্লেন্ড করলে তার ফাইবার নষ্ট হয়, যা সাধারণত চিনি শোষণ ধীরে করতে সাহায্য করে। ফলে ফলের রসে থাকা প্রাকৃতিক চিনি রক্তে দ্রুত প্রবেশ করে—এক ঘণ্টার মধ্যেই শক্তি পড়ে যায় এবং বাড়ে খিদে।
সমাধান : ফলের রসে প্রোটিন পাউডার বা বাদামের মাখন মিশিয়ে নিন। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কমবে।
খালি পেটে দৌড়ানো
অনেকে ভোরে বের হয়ে খালি পেটে দৌড়ান।
তারা ভাবেন যে এতে শরীর আরো সক্রিয় হয়। কিন্তু ডায়েটিশিয়ান জানান, এতে শরীরে স্ট্রেস হরমোন ‘কর্টিসল’ বেড়ে যায়, ফলে ব্যায়াম কঠিন লাগে এবং ফলও কমে যেতে পারে।
খাওয়ার আগে কফি পান
খালি পেটে কফি খেলে অনেকেই অম্বল, বমিভাব বা অস্বস্তি অনুভব করেন। ঋধিমা বলেন, ক্যাফেইন পেটে এসিড বাড়িয়ে দেয়। পেটে খাবার না থাকলে সেই এসিডই অস্বস্তি তৈরি করে।
সমাধান : কফির আগে এক মুঠো বাদাম অথবা এক টুকরা পাউরুটি খেয়ে নিন।
ব্রেকফাস্ট না খাওয়া
ওম্যাড বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মতো ডায়েটের কারণে অনেকেই সকালের নাসতা বাদ দেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞের মতে, এতে মনোযোগ কমে, মস্তিষ্ক ঝিমঝিম করে এবং দুপুরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
ঋধিমার কথায়, দুপুরের খাবারের সময় মানুষ এতটাই ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন যে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। এরপর বিকেলটা কাটে ক্লান্ত-ঝিমুনি নিয়ে। সকালেই দেহের বিপাকক্রিয়া সবচেয়ে ভালো থাকে, তাই একটি সঠিক ব্রেকফাস্ট দিনকে ভারসাম্য দেয়।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



