জুমবাংলা ডেস্ক : কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সীমান্তের স্থানীয়দের বাধার পরও কোনো কোনো সীমান্তে বাড়তি জনবল নিয়ে অনেকটা জোর প্রদর্শন করেই কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে বিএসএফ।
এ নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বিভিন্ন অংশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। আজ শুক্রবার একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া সীমান্তে। সেখানে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, বিজিবির বাধা উপেক্ষা করেই শুক্রবার বেড়া নির্মাণ করেছে বিএসএফ।
সীমান্তবর্তী মুন্সিপাড়ার বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নিজেদের ভূখণ্ডের বাইরে এসে দহগ্রাম ও দহগ্রাম ক্লাব পাড়া এলাকার আন্তর্জাতিক পিলারের ৮ বাই ৪১ এস পিলারের অভ্যন্তরে শূন্যরেখা (নো ম্যান্স ল্যান্ড) বরাবর আকস্মিকভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করে বিএসএফ। বিষয়টি নজরে এলে বিজিবি তাদের বাধা দেয়। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সীমান্তে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করে। এ অবস্থায় সেখানে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করে সতর্ক নজরদারি করা হচ্ছে। অপরদিকে ভারতের অংশেও অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে ফসল চাষ ব্যতীত সীমান্তবর্তী কোনো দেশ তাদের সীমানায় বেড়া কিংবা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। যদিও এই আইনের থোরাই কেয়ার করছে বিএসএফ। আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গ করে সীমান্তে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘আজ সকালের ঘটনা জানতে পেরে বিজিবি সদস্যরা তাদের বাধা দেন। পরে কাজ না করেই ফিরে যায় বিএসএফের সদস্যরা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবারও বিএসএফের অধিক পরিমাণ সদস্য ও শ্রমিক নিয়ে ক্ষমতা খাটিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেন। বিজিবি সদস্যরা প্রথমে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে তারা আর বাঁধা দিতে পারেনি এবং বিজিবি বাঁধা না দেয়ায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে বিএসএফ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সীমান্তের শূন্যরেখা বরাবর আধা কিলোমিটারে প্রায় তিন ফুট উঁচু কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। সীমান্তের উভয় পাশেই সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। দুই পাশে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
৫১ বিজিবির পানবাড়ি কোম্পানি কমান্ডার জামিল আহমেদ বলেন, ‘টহল জোরদারের পাশাপাশি নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। ’
বিজিবির ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তারা। মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বিজিবির ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দীনেরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য গত ৭ জানুয়ারি রাতেও উপজেলার ধবলসুতি সীমান্তে ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা করে বিএসএফ। পরে বিজিবির বাধার মুখে সেটি সরিয়ে নেয়া হয়। তারও আগে ১ জানুয়ারি পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা করলে বিজিবির প্রতিবাদ ও বাধার মুখে সেখান থেকেও ফেরত যায় বিএসএফ ও ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিকরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।