আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার এক প্রেমিক তার প্রেমিকার মন পাওয়ার জন্য কী করেননি! লটারি জিতে ৫০ লাখ কানাডীয় ডলার বান্ধবীকে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। আর সেই টাকা হাতিয়ে তাকে পথে বসিয়ে প্রেমিকা অন্য পুরুষের সঙ্গে লাপাত্তা হয়ে যান। তবে প্রেমিকাকে আর ফিরে পেতে চান না এই যুবক। শুধু চান, অর্থগুলো যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অবশেষে প্রেমিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে কানাডায়। কানাডার উইনিপেগ শহরের বাসিন্দা লরেন্স ক্যাম্পবেল জানান, বৈধ পরিচয়পত্র না থাকায় লটারি জেতার পরও অর্থ তুলতে পারছিলেন না তিনি। লটারিতে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা জিতেছিলেন।
তার বান্ধবী ক্রিস্টাল অ্যান ম্যাকের বৈধ পরিচয়পত্র ছিল। তাই ক্রিস্টালের নামেই লটারির অর্থ তোলেন লরেন্স। এমনকি বান্ধবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই ওই অর্থ জমা করেন।
লরেন্স সবাইকে জানিয়েছিলেন, জন্মদিনে বান্ধবীকে এটি তিনি উপহার দিয়েছেন।
সিটিভি নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে ক্যাম্পবেল জানান, তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গে ছিলেন। তার নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকায় লটারির পুরস্কারের অর্থ ম্যাকের অ্যাকাউন্টেই জমা দেওয়া হয়। প্রথম দিকে সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল।
একটি শপার্স ড্রাগ মার্টে গিয়ে তারা ভিডিও রেকর্ড করেন, যেখানে তারা বিজয়ী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এমনকি ম্যাকে স্মারক চেক হাতে ছবিও তোলেন, যদিও ছবিতে তার মুখের অভিব্যক্তি দেখে খুশি মনে হচ্ছিল না।
এরপর কিছুদিন সব কিছুই ঠিক ছিল। হঠাৎ ক্রিস্টালের ব্যবহার বদলাতে শুরু করল। লরেন্সের ফোন, মেসেজের উত্তর দিতেন না। সব সময় এড়িয়ে যেতেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্লক করে দেন।
ক্যাম্পবেল জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই ম্যাকে উধাও হয়ে যায়। তারা একটি হোটেল রুমে একসঙ্গে থাকতেন। কিন্তু হঠাৎই প্রেমিকা আর ফেরেনি এবং ফোন বা মেসেজেরও কোনো উত্তর দেয়নি।
প্রেমিকার খোঁজ করতে গিয়ে ক্যাম্পবেল দেখেন, অন্য এক প্রেমিকার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। তার সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছেন। এর পরই মামলা করেন ক্যাম্পবেল।
ক্যাম্পবেলে আইনজীবী জানান, ম্যাকে কৌশলে কোনো যোগাযোগ ছাড়াই একেবারে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। তিনি ফোন, মেসেজের উত্তর দেননি, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ব্লক করে দিয়েছেন। ম্যাকের আইনজীবী অবশ্য ক্যাম্পবেলের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে মামলাটি এখন চলছে ম্যানিটোবার কোর্ট অব কিংস বেঞ্চে।
এই মামলায় শুধু ম্যাকের বিরুদ্ধেই নয়, ক্যাম্পবেল লটারি সংস্থা ও ম্যানিটোবা লিকার অ্যান্ড লটারি করপোরেশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছেন। তার অভিযোগ, তারা ঝুঁকির বিষয়টি জানায়নি বা উপযুক্ত পরামর্শ দেয়নি।
তার আইনজীবীর মতে, এই মামলা শুধু প্রেমঘটিত প্রতারণার নয়, বরং এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা বনাম ভাগ্যের দ্বন্দ্বের প্রতিফলন। এটি এমন এক অবস্থা, যা রাজ্য মালিকানাধীন লটারি করপোরেশনগুলোর অবহেলার কারণে তৈরি হয়েছে।
ইতিমধ্যে এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ক্যাম্পবেলের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ তার প্রেমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তবু বিশ্বাসে বড়ই ক্ষতি হতে পারে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।