লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রাচীনকাল থেকে ‘তেল’ ধীরে ধীরে আমাদের রূপকাহনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। দৈনন্দিন ত্বকের যত্ন থেকে শুরু করে গোসল শেষে শরীর ও চুলের যত্নের প্রসাধন; যেমন- ময়েশ্চারাইজার, ক্লিনজার, মাস্ক, কন্ডিশনার, লোশন এবং ক্রিমের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এগুলো কি সত্যিই ত্বকের জন্য নিরাপদ?
উত্তর হলো- হ্যাঁ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভালো। তবে সব তেল কিন্তু সমানভাবে কার্যকর নয়। তাহলে ক্যানোলা তেলের ক্ষেত্রেও কি একই কথা বলা যায়?
ক্যানোলা তেল কী?
এটি একটি উদ্ভিদভিত্তিক লিপিড, যা ক্যানোলা বীজ থেকে তৈরি করা হয়। ডার্মাটোলজিস্ট ডা. কুং বলেন, ‘কিছু দেশে ‘রেপসিড তেল’ শব্দটি শৈল্পিক (রং-তুলি) কাজে ব্যবহৃত তেলের ক্ষেত্রে বলা হয়, তবে ‘ক্যানোলা তেল’ মূলত ভোজ্য তেল। এর পুষ্টি ও শক্তিশালী ফর্মুলা চুল এবং ত্বকের জন্য বেশ ভালো। তাই প্রসাধনীতে এটি ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য তেলের তুলনায় ক্যানোলা তেল তুলনামূলক নতুন। ডার্মাটোলজিস্ট ডা. কুং বলেন, ১৯৭৯ সালে কানাডায় রেপসিড গাছের জেনেটিক্যালি মডিফায়েড সংস্করণ, ক্যানোলা তেল নামে পরিচিত। এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম উদ্ভিজ্জ তেলের উৎস। এমনকি ক্যানোলা তেল ভোজ্য তেল হিসেবে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রোটিনের উৎস।
ক্যানোলা তেলের উপকারিতা
ডার্মাটোলজিস্ট ডা. কুং বলেন, ‘বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, এটি ট্রান্সএপিডার্মাল ওয়াটার লস হ্রাস করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ক্যানোলা তেলে ওলেইক অ্যাসিড ও লিনোলেইক অ্যাসিডের অনুপাত ২:১, যা প্রায় স্বাস্থ্যকর ত্বকের প্রাকৃতিক অনুপাতে মেলে।
এ ছাড়া রেপসিড তেল প্রোটিন, ফিনলিক যৌগ, লিপিড এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-রিঙ্কলে কার্যকরী। ডার্মাটোলজিস্ট ডা. লো জারফো বলেন, ‘এই তেল প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন কে, সি, ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
১। ক্যানোলা তেল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং এর শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
২। ভিটামিন ‘ই’ এবং ‘কে’ ব্রণ ও বার্ধক্যজনিত সমস্যা (যেমন- লাইন এবং রিঙ্কল) কমাতে সাহায্য করে।
৩। ক্যানোলা তেলে থাকা ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের হাইপারপিগমেন্টেশন ও দাগ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
এছাড়াও ভিটামিন ‘ই’ ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে, যা ত্বককে সুস্থ, উজ্জ্বল এবং তারুণ্যদীপ্ত রাখতে সাহায্য করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দুই ডার্মাটোলজিস্টই একমত পোষণ করে বলেন, ব্রণপ্রবণ ত্বকে ক্যানোলা তেলযুক্ত পণ্য ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত। ডা. লো জারফো বলেন, ‘ক্যানোলা তেলের কোমেডোজেনিক রেটিং ৪।’ এই রেটিংয়ের অর্থ- কোনো তেল কতটা ছিদ্র বন্ধ করতে পারে তার পরিমাপ। যদিও ক্যানোলা তেলে ত্বকের জন্য উপকারী উপাদানও রয়েছে। তবে এটি ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে, যা ব্রণ আরও খারাপ করতে পারে। তাই ব্রণপ্রবণ ব্যক্তিদের এটি এড়িয়ে চলা ভালো।
ক্যানোলা তেলের ব্যবহার
যেহেতু ক্যানোলা তেল ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী, তাই এটি রূপ রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। যদিও এটি রোমকূপের ছিদ্র বন্ধ করতে পারে! তাই ক্যানোলা তেল সরাসরি ত্বকে লাগানোর পরিবর্তে প্রসাধনী হিসেবে ব্যবহার করুন। যেসব প্রসাধনীর ফর্মুলায় ‘ক্যানোলা তেল’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।