চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সম্প্রতি একটি স্কুলে খাবার সাজাতে খাওয়ার অযোগ্য রং ব্যবহার করায় সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই শতাধিক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। গানসু প্রদেশের তিয়ানশুই শহরে একটি কিন্ডারগার্টেনে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর খাবারের নমুনা পরীক্ষা করে জাতীয় সুরক্ষা সীমার চেয়ে দুই হাজার গুণ বেশি মাত্রায় সিসা পাওয়ায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পেইজিন কিন্ডারগার্টেনে ভাপানো খেজুরের লাল কেক ও সসেজ কর্ন বান খাওয়ার পর ২৩৩ শিক্ষার্থীর রক্ত পরীক্ষা করে উচ্চ মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে। পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই স্কুলের অধ্যক্ষ রান্নার কর্মীদের অনলাইনে রং কিনতে বলেছিলেন। তবে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় পুলিশ সদস্যরা লুকিয়ে রাখা জিনিসপত্রগুলো অনুসন্ধান করে দেখেন, রংটি স্পষ্টভাবে খাওয়ার অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা ছিল।
লিউ নামের এক অভিভাবক বিবিসিকে বলেন, তিনি তার ছেলের লিভার ও পাচনতন্ত্রে সিসার বিষক্রিয়ার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে চিন্তিত।
গত সপ্তাহে অন্যান্য অভিভাবকের সতর্কবার্তার পর তিনি তার সন্তানকে পরীক্ষার জন্য শি’আনের হাসপাতালে নিয়ে যান। তার ছেলের এখন ১০ দিনের চিকিৎসা ও ওষুধের প্রয়োজন।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রান্নাঘরের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ প্রচার করেছে, যেখানে কর্মীদের খাবারে রং মেশাতে দেখা গেছে। তদন্তকারীরা দেখেছেন, খেজুরের লাল কেক ও সসেজ কর্ন বানে প্রতি কেজিতে এক হাজার ৫২ মিলিগ্রাম ও এক হাজার ৩৪০ মিলিগ্রাম করে সিসা পাওয়া গেছে।
চীনের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা সীমা অনুযায়ী প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ০.৫ মিলিগ্রাম সিসা থাকতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত কিন্ডারগার্টেনটির অধ্যক্ষসহ আরো সাতজনের বিরুদ্ধে বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক খাবার উৎপাদনের সন্দেহে তদন্ত করা হবে, যার মধ্যে কিন্ডারগার্টেনটির প্রধান বিনিয়োগকারীও রয়েছেন।
এদিকে খাবারে এই রং কত দিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে তা জানা যায়নি। তবে বেশ কয়েকজন অভিভাবক চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মার্চ মাস থেকেই তাদের সন্তানরা পেট ও পায়ে ব্যথা এবং ক্ষুধামন্দার অভিযোগ করছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করার পর, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তিয়ানশুই শহরের মেয়র লিউ লিজিয়াং বলেছেন, এই ঘটনা জনগনের খাদ্য নিরাপত্তার দেখভালে ক্রুটি ও সীমাবদ্ধতা উন্মোচন করেছে। শহরের লোকজনের উচিৎ এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।