ফেনীর সোনাগাজীতে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে পৌর শহরের কাশ্মীরবাজার রোডে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে, ২৮ অক্টোবর সোনাগাজী সরকারি কলেজ ছাত্রদল কর্মী মিরাজ ও রায়হানের ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করে।
এ ঘটনায় ওই দিনই মামলা করা হয়। মামলায় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস ও তার কয়েকজন অনুসারীকে আসামি করা হয়। সেই জেরে আজ দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কলেজ ছাত্রদল কর্মী মিরাজ ও রায়হানের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার পৌর শহরে ছাত্রদলের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সোনাগাজী সরকারি কলেজের সদস্যসচিব জিহাদ। সভায় বক্তারা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টুকে নিয়ে বক্তব্য দেন। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের নাম উল্লেখ করা হয়।
এর প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব নুর আলম সোহাগ ও পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম রিংকুর নেতৃত্বে আজ বিকেলে পৌর শহরে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কাশ্মীরবাজার রোডের মাথায় গেলেই আরেক গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষই সংঘর্ষের জন্য প্রতিপক্ষকে দায়ী করেছে।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব নুর আলম সোহাগ বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদে ও জামাল উদ্দিন সেন্টু ভাইকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করার প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করি। কিন্তু তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের মিছিলের পেছন দিয়ে হামলা চালায়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করলে এনায়েতুল্লাহ, নজরুল ইসলাম রিঙ্কু, নুর আলম, রাশেদুল হাসান, নোমান, আজিজুল, কামরুল ইসলাম, ইউসুফ, রবিনসহ অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি এর সুরাহা না হয়, তবে ভবিষ্যতে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
চরদরবেশ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্যসচিব নুর আলম রিয়াদ বলেন, ‘হঠাৎ দেখি মিছিল নিয়ে পৌর শহরের পশ্চিম বাজারে এদিকে তারা আসতেছে। নিজেরা নিজেরা দ্বন্দ্ব লেগে মারামারি শুরু করে তারা। পরবর্তীকালে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ ভূঁইয়ার নামের উল্টোপাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। বিভিন্ন দোকানপাটে হামলা করলে আমরা দ্রুত তাদের দৌড়ে পাঠিয়ে দিই।’
এ ঘটনায় তাদের হামলায় খুরশিদ ভূঁইয়ারই অন্তত ২০ অনুসারী আহত হয়েছেন। তাঁদের কয়েকজন হলেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, রহমত উল্লাহ শাহীন, পৌর ছাত্রদলের সদস্য ওসমান গনি জিহাদ, নুর করিম সম্রাট, যুগ্ম আহ্বায়ক মতিউর রহমান মাসুম, পৌর ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য জসিম উদ্দিন, সাবেক উপজেলা ছাত্রদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাত রামী, শাহাদাত হোসেন সজীব, শাহরিয়ার ইসলাম, মোহাম্মদ পারভেজ ও জহির উদ্দিন বাবর। আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে আসে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তা স্বাভাবিক হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।