জুমবাংলা ডেস্ক : বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবছর আমের ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনা অনেক কম। ঘূর্ণিঝড় অশানির কারণে আগাম আম ভেঙে বিপাকে পড়েছেন আম চাষীরা। অপুষ্ট আম নানা কেমিক্যাল দিয়ে বাজারে ওঠানো হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় আসছে এমন খবরে চাষীরা আতংকিত হয়ে আগেই গাছ থেকে আম ভেঙে ফেলায় অপুষ্ট আম ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে। পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে।
সাতক্ষীরা কুখরালী গ্রামের আম চাষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১৮ বিঘা জমিতে এ বছর আম চাষ করেছেন তিনি।
“এ বছর গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম উৎপাদন কম হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশনির আঘাত হানার খবরে আতংকিত হয়ে আম চাষীরা অপরিপক্ক আম আগেভাগে ভেঙে ফেলেছেন। গত বছর যে আম ২৮শ টাকা প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে সেই আম চলতি বছর ১৬০০-২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
জ্যৈষ্ঠ মাস আসার অগেই সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাইসহ বিভিন্ন জাতের আম। আবহাওয়া আর মাটির গুনাগুনের কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে ভাগেই পাকে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আর এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০-৬০ হাজার মেট্রিক টন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি মাসের ৫ তারিখ গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ আম পাড়া শুরু হয়েছে।
১৬ মে থেকে হিমসাগর এবং মে মাসের শেষে ল্যাংড়া আম পাড়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ঘূর্ণিঝড় অশানির কারণে আম চাষীরা বাগান থেকে আগে ভাগেই আম পেড়েছেন।
সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান, বাজারে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষীরসরাই, বৈশাখিসহ নানা জাতের আমে ভরপুর হয়ে উঠেছে বাজার। গ্রামাঞ্চল থেকে ভ্যান ও বিভিন্ন পরিবহনযোগে শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের আড়ৎগুলোতে আসছে এসব আম।
তিনি বলেন, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবছর আমের ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনা অনেক কম। তার উপর ঘূর্ণিঝড় অশানির কারণে আগাম আম ভেঙে বিপাকে পড়েছেন আম চাষীরা। অপুষ্ট আম নানা কেমিক্যাল দিয়ে বাজারে ওঠানো হচ্ছে। এসব আম পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। প্রশাসনিক তৎপরতা থাকার পরও কেমিক্যাল দেওয়া থামছে না।”
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা কল্যাণশীষ জানান, “যে সব কেমিক্যাল দিয়ে অপুষ্ট আম পাকানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। লিভার, কিডনি, পাকস্থলী এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে এসব কেমিকেল শরীরে গেলে।”
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, কেমিক্যালযুক্ত অপুষ্ট আম যাতে বাজারে না ওঠে সে ব্যাপারে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।