জুমবাংলা ডেস্ক : ভোলার লালমোহন উপজেলার একুশ বছরের তরুণ মো. জুয়েল। তিনি উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা বাজার এলাকার বধুর বাড়ির সোহরাবের ছেলে। বয়সে তরুণ হলেও জুয়েলকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। জীবিকার জোগাড় করতে বসতবাড়ি সংলগ্ন বাজারে হুইল চেয়ারে বসে ছোট একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করছেন তরুণ জুয়েল। সংসার চালাতে ওই দোকানের আয় বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন তিনি।
জুয়েল জানান, গত তিন বছর আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। ওই কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ একদিন বাঁশের মাচা ছিঁড়ে চারতলা থেকে নিচে পড়ে যাই। এতে করে মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। ওই দুর্ঘটনার পর থেকে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি না। তাই হুইল চেয়ারে করেই তখন থেকে চলাফেরা করতে হচ্ছে। বর্তমানে ধার-দেনা করে আমার বাবা বসতবাড়ি সংলগ্ন মদিনা বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান করে দেন। হুইল চেয়ারে বসেই ওই দোকানে বেচা-কেনা করি। এই দোকান থেকে কিছুটা আয় হয়। তা বাবা-মাকে দিই সংসার চালানোর জন্য।
তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার পর বাবা-মা ধার-দেনা করে মেরুদণ্ডের একাংশের অপারেশন করান। তখন ডাক্তার জানিয়েছেন; অপর অংশেরও অপারেশন করা হলে আমি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবো। করতে পারবো স্বাভাবিক চলাফেরা। আগের অপারেশন করাতেই পরিবার অনেক টাকা ব্যয় করেছেন। এখন আর্থিক অভাবের কারণে অন্য অপারেশনটি করানো যাচ্ছে না। মানুষের সহযোগিতা পেলে হয়তো মেরুদণ্ডের বাকি অপারেশনটি করাতে পারবো। যার মাধ্যমে আমি স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবো। তাই সবাইকে আমার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।
জুয়েলের বাবা সোহরাব বলেন, আমার ছোট্ট একটি নার্সারি রয়েছে। ওই নার্সারির আয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। তবুও ছেলের দুর্ঘটনার পর দেনা করে তার মেরুদণ্ডের একটি অপারেশন করিয়েছি। এখন টাকা নেই। তাই বসতবাড়ি সংলগ্ন মদিনা বাজারে একটি ছোট চায়ের দোকান করে দিয়েছি। ওইখানে হুইল চেয়ারে বসে ছোট্ট দোকানটি চালায় আমার ছেলে। ডাক্তার বলেছেন; আরেকটি অপারেশন করালে আমার ছেলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। এর জন্য দরকার অন্তত দুই লাখ টাকা।
তবে সেই অর্থ জোগানোর মতো অবস্থা আমাদের নেই। যার জন্য ছেলের মেরুদণ্ডের বাকি অপারেশনটি করাতে পারছি না। আমি চাই, আমার ছেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরুক। এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ করছি; আমার ছেলের অপারেশনে যেন সবাই মানবিক দিক বিবেচনা করে এগিয়ে আসেন। কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৯৪১০৪৮৩২৬ -এই নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় অসহায়দের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওইসব সুযোগ-সুবিধা পেতে ওই তরুণ বা তার পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো। এছাড়া ওই তরুণ যদি প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদন করে থাকে, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে ভাতা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।x
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।