লাইফস্টাইল ডেস্ক : মূলত বিছানা, বালিশ বা সোফা এইসকল জিনিসে ছারপোকার উপদ্রব অনেক বেশি হয়ে থাকে। ছারপোকার কামড়ে জ্বালাপোড়া, ব্যথা এবং অ্যালার্জির সমস্যা শুরু হয়ে যায় যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই বিছানাপত্র থেকে ছারপোকার উপদ্রব যতোটা সম্ভব দূর করে ফেলা উচিত।
বাংলাদেশে ছারপোকা চেনেন না বা নাম শুনেন নি এমন মানুষ বোধহয় কমই আছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা বা মেসে থাকে এমন কেউই বোধহয় নেই যে ছারপোকার জালায় অতিষ্ঠ হয়নি। ছোট এই প্রাণীটি যে কারো রাতের ঘুম হারাম করে দিতে পারে। আর বাড়িতে একবার ছারপোকা দেখা গেলে ছারপোকা দমন এর উপায় খুজতে মাথার ঘাম পায়ে এসে যায়। অনেকে হয়তো বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদিও ব্যবহার করেন।
কিন্তু তবুও অনেক সময় দেখা যায় ছারপোকা থেকে মুক্তি মেলেনি। তবে আপনি জানেন কি প্রাকৃতিকভাবেও আপনি ছারপোকা থেকে মুক্তির পেতে পারেন? হ্যা, এটাও সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনাকে নিচের কোন একটি বা কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তো চলুন দেখে নেই প্রাকৃতিক উপায়ে ছারপোকা দমনের ৫টি উপায় সম্পর্কে:
১)গরম পানি: ছারপোকা দমনের খুব কার্যকরী উপায় হল গরম পানি। গরম পানিতে শুধুমাত্র ছারপোকাই না সাথে ব্যাকটেরিয়া সহ আরো অনেক অণুজীবই মারা যায়। এজন্য আপনাকে আপনার পরিধেয় জামাকাপর গুলো গরম পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে। এরপর আপনার রুমটিকেও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ছারপোকা মুক্ত করতে হবে। ধোওয়ার পর ভালভাবে জামাকাপর ও রুম শুকাতে হবে। ছারপোকা মারার জন্য যদিও ৩০-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাই যথেষ্ট তবুও ফুটন্ত পানি কিছুটা ঠাণ্ডা করেই রুম ধয়া উচিত।
২)সূর্যের তাপ:ছারপোকা দমন এর আরেকটি পদ্ধতি হল সূর্যের তাপ এর ব্যবহার। ছারপোকা দমনে রোধ একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপায়। সেই প্রাচীন কাল থেকেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। গ্রামেগঞ্জে এখনো এই পদ্ধতির প্রয়োগ দেখা যায়। এক্ষেত্রে যেসব জিনিস গরম পানি দিয়ে ধোওয়া যাবে না বা ধোওয়া অনেক কষ্টসাধ্য সেগুলো সকালে রোধে দিতে হয়। শক্তিশালী রোধের তাপমাত্রায় ছারপোকাগুলো মারা যায় এবং সাথে তাদের ডিমও।
৩)ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার: যদিও এই পদ্ধতিটি বাংলাদেশিদের কাছে অতটা জনপ্রিয় নয় তবুও এটি ছারপোকা দমনের অন্যতম কার্যকরী উপায়। এজন্য যেসব স্থানে ছারপোকা রয়েছে সেসব স্থানে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দ্বারা পরিষ্কার করুন। এক্ষেত্রে একাধিক বার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে পরিষ্কার করা উচিত। এতে করে ছারপোকার ডিমসহ ছারপোকা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারে চলে যাবে। তবে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারটি বাড়ির বাইরে নিয়ে পরিষ্কার করুন এবং গরম পানি দিয়ে ছারপোকা মেরে ফেলুন ও ভ্যাকুয়াম ক্লিনারটি ধুয়ে নিন।
৪)প্রাকৃতিক কীটনাশকের ব্যবহার: ছারপোকা দমন এর আরেকটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হল প্রাকৃতিক কীটনাশকের ব্যবহার। এক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত কীটনাশকটি হল ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ (Diatomaceous earth)। বহু ছারপোকা দমনকারী সংস্থাও এটি ব্যবহার করে। এজন্য যেসব স্থানে ছারপোকা থাকে যেমন বিছানা, ঘরের কোণা, সোফা ইত্যাদিতে খুব পাতলা করে ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ (Diatomaceous earth) ছিটিয়ে রাখুন। টেক্সাস এ এন্ড এম ইউনিভার্সিটি অনুযায়ী, ছারপোকারা যখন ডায়াটোমেসিয়াস আর্থ এর সংস্পর্শে আসে তখন এর রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ছারপোকা শুকিয়ে মারা যায়।
৫)পুদিনাপাতা: অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ছারপোকা পুদিনাপাতার গন্ধ সহ্য করতে পারে না। তাই বিছানা থেকে ছারপোকা তাড়াতে বিছানার নিচে পুদিনা পাতা রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে শুঁকনো পুদিনা পাতাতেও কাজ হবে। এছাড়া আপনি আপনার সোফার পাশে, বাড়ির প্রতিটি কোণে কোণেও পুদিনা পাতা রাখতে পারেন। আর এজন্যই অভিজ্ঞরা ভ্রমণের সময় বা ট্যুর এর বিছানা গুলোতে শুকনো পুদিনাপাতা রাখতে পরামরশ দেন।
আরো মনে রাখুন: ছারপোকা থেকে পুরোপুরি মুক্তির পেতে ছারপোকা চলে গেলেও ঘরের বিছানা, তোষক ইত্যাদি নিয়মিত রোদে শুকোতে দিন। এতে করে নতুন করে ছারপোকা হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না। আর আপনার বিছানাটি দেয়াল থেকে দূরে রাখুন এবং শোয়ার আগে ও পরে বিছানা ভাল করে ঝেড়ে ফেলুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।