জুমবাংলা ডেস্ক : সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধের আদলে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার স্বল্পের চক এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান সমরক্ষেত্রকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করতে সেখানে দৃষ্টিনন্দন এ আঞ্চলিক স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করল জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্মৃৃতি সৌধের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এ স্মৃতি সৌধের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সাত একর জমির ওপর স্মৃতি সৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সার্বিক সহযোগিতায় নির্মাণ কাজে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে জেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনসহ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কয়েকটি সংগঠন। ঐতিহাসিক ভাস্কর্য নির্মাণকারী বিশেষজ্ঞ স্থপতি ও নকশাবিদের তৈরি নকশার ভিত্তিতে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের পর গত সাত মাস ধরে স্মৃতি সৌধটির নির্মাণ কাজ করা হয়।
মাটির নিচে ষাট ফুট গভীর পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী বেজমেন্ট স্থাপন করে তার ওপর আর সি সি ঢালাইয়ের ১৩টি পিলারের সমন্বয়ে নির্মিত হয়েছে দর্শনীয় এই স্মৃতি সৌধটি। আকৃতিতে এটি জাতীয় স্মৃতিসৌধের চেয়ে কিছুটা ছোট হলেও মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালকে প্রাধান্য দিয়ে উচ্চতা করা হয়েছে ৭১ ফুট।
স্মৃতি সৌধটি নির্মাণের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আবেগ ধরে রাখতে পারেননি দেশের বীর সন্তানরা। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে নির্মাণে কাজের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
এ স্মৃতি সৌধ থেকে ভবিষ্যত প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানতে পারবে বলে মনে করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।
তিনি বলেন, হাজার বছর পরেও মানুষ এই স্মৃতিসৌধ দেখতে এসে জানতে পারবে কারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, কার আহবানে ও কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দেশি বিদেশি কারা কারা অবস্থান নিয়েছিল এসব তথ্য জানতে পারবে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আরও সমৃদ্ধ করতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ ক ম মোজাম্মেল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, কাজটি আরও আগে করা উচিত ছিল। আমরা সেটা পারিনি। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন স্থানীয়দের সহায়তায় এই স্মৃতি সৌধটি নির্মাণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই আমরা নতুন করে পরিকল্পিনা করছি। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে এমন আঞ্চলিক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।
এদিকে, মূল কাজ শেষে স্মৃতি সৌধটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এর আস্তর, প্রলেপ ও রঙ করাসহ আনুষঙ্গিক সৌন্দর্য বর্ধনের বেশ কিছু কাজ এখনও বাকী রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কাজগুলো পুরোপুরি শেষ করার আশা করছে জেলা প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।