বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : চ্যাটজিপিটি’র মতো এমন এক এআই টুলের কেনাবেচা ডার্ক ওয়েবে শনাক্ত করা গেছে যেটি কোনোরকম নৈতিকতার ধার ধারে না। গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এর মাধ্যমে হ্যাকাররা এমন বিস্তৃত পরিসরে সাইবার আক্রমণ চালাতে পারে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
‘ওয়ার্মজিপিটি’ নামের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা চিহ্নিত করেছে সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ‘স্ল্যাশনেক্সট’। আর ডার্ক ওয়েবের বিভিন্ন সাইবার অপরাধ সংশ্লিষ্ট ফোরামে একে এমন ‘অত্যাধুনিক এআই মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যা হ্যাকিংয়ের জন্য ‘চ্যাটজিপিটির মতোই’ টেক্সটভিত্তিক জবাব তৈরি করতে পারে।
“এই টুল নিজেকে তুলে ধরছে বিভিন্ন জিপিটি মডেলের বিকল্প হিসেবে। আর বিশেষভাবে ক্ষতিকারক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে নকশা হয়েছে এটি।” –ব্লগ পোস্টে ব্যাখ্যা করেছে স্ল্যাশনেক্সট।
“ওয়ার্মজিপিটি’ বিভিন্ন ধরনের ডেটা উৎসের ভিত্তিতে প্রশিক্ষিত। আর এর বিশেষ মনোযোগ মনযোগ ম্যালওয়্যার সংশ্লিষ্ট ডেটায়।”
ওয়ার্মজিপিটি’র ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ প্রদানে চাপ দেওয়ার লক্ষ্যে ইমেইল তৈরির নির্দেশ দেওয়া।
মানুষ যেন এই প্রযুক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে ওপেনএআই’র চ্যাটজিপিটি ও গুগলের বার্ডের মতো শীর্ষ এআই টুলগুলোয় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, ওয়ার্মজিপিটির নকশা করা হয়েছে এইসব অপরাধী কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যেই।
গবেষকরা পরীক্ষা করে বলছেন, ওয়ার্মজিপিটির তৈরি ইমেইল ‘কেবল বিশ্বাসযোগ্যই নয় বরং এটি অনেক চালাকও’। আর সম্ভাব্য ফিশিং আক্রমণের ঝুঁকিও রয়েছে এতে।
হ্যাকিং ফোরামে ওয়ার্মজিপিটির বেনামী নির্মাতার আপলোড করা স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, এই চ্যাটবট বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যালওয়্যার আক্রমণের জন্য কোড লেখা ও ফিশিং আক্রমণের জন্য ইমেইল তৈরির মতো বিষয়াদি।
ওয়ার্মজিপিটি’র নির্মাতা একে ব্যাখ্যা করেছে ‘জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি’র সবচেয়ে বড় শত্রু’ হিসেবে। ব্যবহারকারীকে ‘সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেওয়াকে’ এর কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ‘ইউরোপল’ সতর্ক করেছে, চ্যাটজিপিটির মতো ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)’ ব্যবহার করে সাইবার অপরাধীরা জালিয়াতি, ছদ্মবেশ ধারণ বা সামাজিক মাধ্যম হ্যাকিংয়ের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
“ব্যবহারকারীর প্রম্পটের ভিত্তিতে চ্যাটজিপিটির বাস্তবসম্মত টেক্সট তৈরির সক্ষমতা ফিশিং আক্রমণের জন্য সহায়ক টুল হতে পারে।” –উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
“এর আগে অনেক ফিশিং জালিয়াতি ব্যাকরণগত ও বানানগত ভুলের কারণে খালি চোখে শনাক্ত করা গেলেও এখন ইংরেজি ভাষায় প্রাথমিক দক্ষতা থাকলেই বাস্তবসম্মত উপায়ে কোনো সংস্থা বা একক ব্যক্তির ছদ্মবেশ ধারণ করা সম্ভব।”
ইউরোপোল সতর্ক করেছে, এইসব ‘এলএলএম’ ব্যবহার করে হ্যাকাররা আরও বিস্তৃত পরিসরে দ্রুততার সঙ্গে সাইবার আক্রমণ চালানোর’ সুযোগ পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।