জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত ৫ জুন প্রবীণ এক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই মৃত্যুর পর প্রশাসন নতুন করে সচেতনতা গ্রহণে তৎপর হয়ে উঠেছে। দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন নির্দেশনা, আর সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ভাইরোলজিস্টদের মতে, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরি। প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, তবেই বিপদের আশঙ্কা কমানো সম্ভব।
করোনার নতুন উপধরন নিয়ে আইসিডিডিআরবির প্রতিবেদন
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর তথ্যমতে, চলতি বছর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো করোনার নতুন দুটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট – এক্সএফজি (XFG) এবং এক্সএফসি (XFC)। এদের উৎপত্তি ওমিক্রন জেএন.১ থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এক্সএফজি উপধরনে। এই ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি, তাই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
করোনার নতুন উপধরন সম্পর্কে যা জানা গেছে
নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে পূর্ববর্তী রূপগুলোর চেয়ে আলাদা করছে:
পূর্ববর্তী উপধরনের তুলনায় আরও দ্রুত ছড়াতে পারে
প্রচলিত পরীক্ষায় কখনো ফলস নেগেটিভ আসতে পারে
অনেক ক্ষেত্রে ক্ল্যাসিক্যাল উপসর্গ অনুপস্থিত থাকে
লক্ষণ যেগুলো সচরাচর দেখা যাচ্ছে না, তবে চিন্তার কারণ
এই নতুন উপধরনের কারণে আক্রান্ত অনেক রোগীর মধ্যে কাশি বা জ্বরের মতো প্রচলিত উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। নিচের লক্ষণগুলো কিন্তু এই ভ্যারিয়েন্টে হরহামেশা দেখা যাচ্ছে:
গিঁটে ব্যথা
মাথাব্যথা
গলাব্যথা
পিঠে ব্যথা
অতিরিক্ত ক্লান্তি
ক্ষুধামান্দ্য
হালকা থেকে মাঝারি শ্বাসকষ্ট
নিউমোনিয়া
অনেক ক্ষেত্রে, নাকের সোয়াব পরীক্ষায় এই ভাইরাস ধরা পড়ে না। তবে বুকের এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণের আলামত পাওয়া যায়।
এই নতুন রূপ কি আগের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক?
বর্তমানে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বলছে, অমিক্রনের এই উপধরন (XBB, JN.1) যদিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি মৃত্যুহারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। তবে কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, যেমন:
বয়স্ক ব্যক্তি
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল
ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন
এইসব ক্ষেত্রে গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে।
প্রতিরোধই হতে পারে প্রধান হাতিয়ার
করোনার নতুন উপধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কিছু প্রাথমিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি:
বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধান করুন
জনসমাগমপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন
কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্ক নয়, সতর্কতাই আমাদের বাঁচাতে পারে। করোনার নতুন উপধরনগুলো সম্পর্কে সচেতন থেকে যথাযথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সংক্রমণের হার কমানো সম্ভব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণই পারে আমাদের নিরাপদ রাখতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।