লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমরা অনেকেই আছি, যারা কারও অনুরোধে ‘না’ বলতে পারি না। চেনা হোক বা অচেনা, কেউ কিছু চাইলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। ভাবি, না বললে যদি মন খারাপ করে! অথচ নিজের ইচ্ছেটা কোথায় যেন হারিয়ে যায়। পরে মনটা খারাপ হয়ে থাকে, নিজের ওপরই রাগ হয়।
আপনি কি এমনই একজন? তাহলে জেনে রাখুন, এই ‘সবার মন রাখার’ অভ্যাসের পেছনে থাকতে পারে এক ধরনের মানসিক উদ্বেগ। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘অ্যাংজাইটি’। এই উদ্বেগ থেকে জন্ম নেয় মানুষ খুশি করার এক চাপ। যেটাকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন ‘পিপল-প্লিজিং’।
সব সময় চাইছেন, সবাই খুশি থাকুক, কেউ রাগ না করে, কেউ কিছু মনে না করে। তাই নিজের না থাকলেও, হ্যাঁ বলে ফেলেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে আগে ভেবে বসেন, না করলে যদি খারাপ ভাবেন! এই ভয়টাই হলো আপনার অজান্তে জন্ম নেওয়া উদ্বেগ।
মনোবিশেষজ্ঞ মনসী কোঠারি বলেন, ছোটবেলা থেকেই কেউ কেউ এমন পরিস্থিতির মধ্যে বড় হয়, যেখানে ভালো ব্যবহার করলেই প্রশংসা মেলে বা ভালোবাসা পাওয়া যায়। ফলে বড় হয়েও তাদের মধ্যে থেকে যায় সেই অভ্যাস। তারা মনে করেন, সব সময় হাসিমুখে হ্যাঁ বলাই ‘ভদ্রতা’। অথচ এর ফলে দিনের পর দিন জমতে থাকে নিজের কথা না বলতে পারার হতাশা আর এক ধরনের মানসিক চাপ।
এমনকি অনেকে আছেন, যারা আড্ডা দেওয়ার পরেও ঘরে ফিরে চিন্তা করেন, ‘আমি কিছু ভুল বলিনি তো?’ আবার কেউ কিছু চেয়ে বসলে, অনেক কিছু বাদ দিয়ে হলেও সেটি করে দেন, শুধু এই ভয় থেকে, ‘না’ বললে হয়তো রেগে যাবে।
এভাবে চলতে চলতে একটা সময় নিজের ভেতর জমে ওঠে বিরক্তি, হতাশা, এমনকি ক্ষোভ। সম্পর্কগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়। কারণ, আপনি শুধু দিচ্ছেন, কিছুই নিচ্ছেন না। দিনশেষে নিজেকে ফাঁকা লাগে।
তবে আশার কথা, এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। প্রথমে বুঝতে হবে, আপনি এমন করছেন কেন। তার পরে ধীরে ধীরে ‘না’ বলার অভ্যাস গড়তে হবে। প্রথমে অস্বস্তি লাগলেও, পরে দেখবেন ভালো লাগছে। মানুষকে খুশি রাখার জন্য সব সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলার মানে নেই। নিজের ইচ্ছা, নিজের চাওয়া, এগুলোরও মূল্য আছে।
নিজেকে বোঝা, নিজের প্রতি দয়াশীল হওয়া। আর দরকার হলে পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়াই হতে পারে আপনার মুক্তির পথ। কারণ সবাইকে খুশি রাখতে গিয়ে যদি আপনি নিজে খুশি না থাকেন। তাহলে সেটা কারো জন্যই ভালো নয়। সবার আগে দরকার, নিজের সঙ্গে ভালো থাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।