আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর ৮০০ কোটির মানুষের একে অপরের সঙ্গে কোনো মিল নেই। তবে খাবারের দিক থেকে খানিকটা মিল পাওয়া যায়। একেক দেশ বা অঞ্চলভেদে খাবারের রয়েছে নানান রেসিপি। তবে শুধু ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি ছাড়াও অনেকে ইট, বালু, মাটি খেয়েও জীবনধারণ করছেন।
এর আগে ইট, বালি খেয়ে জীবনধারণ করেন এমন অনেকের কথাই হয়তো শুনেছেন। তবে মাটি খাওয়ার কথা শুনেছেন কি? দিনে তাও ১০ ব্যাগেরও বেশি। আর এই মাটি খাওয়ার জন্য ব্যয় করেছেন হাজার হাজার টাকা। তবে যে সে মাটি নয়, মাটি আসত সুদূর আফ্রিকা থেকে।
লন্ডনের বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী ডাইমন্ড ডিনার মাটি খেতেন তার গর্ভবস্থা চলাকালীন। সেসময় অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মাটি ছিল তার অন্যতম প্রধান খাবার। দিনে ৩০ ব্যাগ পর্যন্ত মাটি খেয়েছেন তিনি। মাটি খাওয়ার জন্য খরচ করেছেন প্রায় ৪ হাজার ডলার । সকালের খাবারে তার মাটি চাই-ই চাই।
গর্ভাবস্থায় নারীদের বিভিন্ন খাবার খাওয়ার উপর আগ্রহ বাড়তে থাকে। কেউ আচার খেতে পছন্দ করন কেউবা আইসক্রিম, ফাস্টফুড। তবে অনেকেই হয়তো মাটি খাওয়ার কথা জানেন না। ডিনা গর্ভাবস্থায় একদিন খেয়াল করেন ডিটারজেন্টের গন্ধ তার খুব ভালো লাগছে। এরপর ভেজা মাটির গন্ধও তার খুব ভালো লাগতে শুরু করে এবং তা খাওয়ায়র ইচ্ছা জাগে। সেই শুরু।
২০১৩ সালে প্রথম গর্ভবতী হন ডিনা। তখন থেকেই মাটি খাওয়ার অভ্যাস। এখনো খাচ্ছেন, তবে এর মাঝে আরও দুইবার গর্ভবতী হয়েছেন। তখন মাটি খাওয়ার ইচ্ছাও অনেক বেড়ে যেত। বাসার পাশের একটি সুপারশপ থেকে ভোজ্য মাটি কিনতেন তিনি। যা মধ্য আফ্রিকার কঙ্গো থেকে আমদানি করা। এই কাদামাটির নাম মাবেলে।
গর্ভাবস্থায় মাটি খাওয়ার অভ্যাসটি আসলে একটি রোগ। এই রোগটিকে পিকা বলা হয়। ডায়মন্ড জানান, তিনি যখন গর্ভবতী ছিলেন তখন মাটি খেতে ভীষণ ইচ্ছা হতো তার। এমনকি একদিনে ১০ ব্যাগ পর্যন্ত মাটি খেয়েছেন তিনি। এতে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়নি তার। বরং এটি ত্বক ও পেটের জন্য ভালো বলেই মনে করেন ডায়মন্ড।
শুধু আফ্রিকায় নয় বাংলাদেশেও তৈরি হয় ভোজ্য মাটি। আফ্রিকা এখনো দারিদ্র্যতা নিত্য সঙ্গী। ক্ষুধা মেটাতেই তারা মাটির বিস্কুট খায়। এক সময় একই কারণে মাটি খাওয়ার চল শুরু হয়েছিল। তবে এখন খাবারের অভাব না থাকলে সেই অভ্যাস রয়ে গেছে অনেকের।
জানলে অবাক হবেন, এই বিখ্যাত পোড়ামাটির বিস্কুট তৈরি হতো হবিগঞ্জসহ সিলেটের কিছু অঞ্চলে। এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরি এই বিস্কুটের নাম ছিকর। ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ সালের দিকে ছিকর হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গ্রামে নিম্নবিত্ত সমাজে প্রচলিত এক বিশেষ খাবার ছিল। তবে শুধু ক্ষুধা নিবারণের জন্যই নয় বরং এক ধরনের অভ্যাসের বশেই লোকজন ছিকর খেত।
সূত্র: নিউইয়রক পোস্ট, ডেইলি মেইল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।