লাইফস্টাইল ডেস্ক : সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এ ব্যাপারে কিছুই মনে করতে পারেন না রোগীরা
আমাদের মধ্যে অনেকেরই ঘুমের সময় নাক ডাকা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ায় ঘুম অপূর্ণ থেকে যায়। একেই বলে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নিদ্রাকালীন শ্বাসরোগ। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে নানা রকম শারীরিক জটিলতা, এমনকি হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে ঘুমের মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থা ১০ সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এসময় মানুষের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মস্তিষ্ক প্রভাবিত হয়ে মানুষকে জাগিয়ে তোলে। জেগে উঠলেও শ্বাস নেওয়ার সাথে সাথেই আবার ঘুমিয়ে পড়েন। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এব্যাপারে কিছু মাথায় থাকে না রোগীদের। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা নিজেদের স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলেও জানতে পারেন না।
সাধারণত, দুই ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে মানুষ।
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)
এতে রোগীর গলবিলে শ্বাস বন্ধ হয়ে নাক ডাকার সূত্রপাত ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সারাবিশ্বে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২-৪ জন ওএসএ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগে থাকে।
সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া (সিএসএ)
সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয় মানুষের মস্তিষ্ক। হার্ট ফেইলিওর কিংবা লিভারের জটিলতা থেকে এই রোগের সৃষ্টি হয়।
চলুন দেখে নেওয়া যাক এই রোগের প্রধান কিছু কারণ।
দৈহিক স্থূলতা
যাদের ওজন বেশি তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটি
কিছু মানুষের বিশেষত এশিয়া অঞ্চলের মানুষের মধ্যে দেখা যায়, নিচের চোয়াল ছোট বা পেছনের দিকে চাপা, ফলে মুখগহ্বর সংকীর্ণ হয়ে যায়। এধরনের রোগীদের দৈহিক স্থূলতা না থাকলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে।
বয়স
৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা বেশি। তবে শিশুদের, বিশেষ করে যাদের টনসিল অথবা অ্যাডিনয়েড আকারে বড় হয়, তাদেরও হতে পারে।
ধূমপান
ধূমপানের ফলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়, যা প্রতিরোধযোগ্য।
জেনেটিক বা বংশগত রোগ
বশগত বিভিন্ন রোগ যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি, স্ট্রোক, হাইপোথাইরয়েডিজম ইত্যাদি স্লিপ অ্যাপনিয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ন্ত্রণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণে এনে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে। এরই সঙ্গে শোবার ভঙ্গি বা অভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন, চিত হয়ে শোয়ার পরিবর্তে একপাশে ফিরে শোয়ার অভ্যাস করুন। সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়াও, খাওয়ার ঠিক পরেই শোবেন না। সম্ভব হলে একটু হাঁটাচলা করে তবেই ঘুমোতে যান। এতে হজমের সমস্যা জনিত কারণে শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমে যাবে। সমস্যা দীর্ঘদিনের হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।