জুমবাংলা ডেস্ক : সুনামগঞ্জে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম না থাকায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। খোলা বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়। যদিও সরকার প্রতি মণ ধান ১২০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
জানা যায়, সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে গত ৭ এপ্রিল। তবে, জেলায় পুরোদমে ধান কেনা শুরু করা যায়নি। তাই নগদ টাকার প্রয়োজনে কম দামে ফরিয়াদের কাছে ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে গত বছর সরকারিভাবে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার টন। চলতি বছর তা কমে ১৭ হাজার ৪৮৩ টন নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় এবার প্রায় পৌনে ৪ লাখ কৃষক ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন ধান উৎপাদন করেছেন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গুয়ারচুরা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালিক বলেন, ‘সরকারিভাবে ধান কেনার জন্য আমরার এদিকে কেউ আইছে না, খোঁজ খবরও নিচ্ছে না। আমি প্রায় ১০ কেয়ার জমিতে ধান চাষ করছি টাকা ঋণ করে। এখন ঋণের টাকা আর শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে হচ্ছে ফরিয়াদের কাছে ধানের মণ ৭৫০-৮৫০ টাকায় বিক্রি করে।’
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হাওর পারের কৃষক মো. হাসান তালুকদার বলেন, ‘আমি এবার ৬ একর জমিতে বোরো ধান করেছি, কয়েক বছর পর এবারই আমার ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু সরকার মণ প্রতি ধানের মূল্য নির্ধারণ করছে ১২০০ টাকার বেশি কিন্তু এই দামে আমি বিক্রি করতে পারছি না। আমাদের এদিকে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০- ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। পরিবারের ব্যয় মেটাতে বাধ্য হয়েই কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, কৃষক যেন তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সেই জন্য হাওরের বোরো ও আমন ফসল বাজারজাত ব্যবস্থা আরও উন্নত করা দরকার। এছাড়া কৃষক যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে ধান ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারেন ও মধ্যে থাকা খোলা বাজারের ফরিয়া ও দালালদের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
ধান কিনতে দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভুইঞা বলেন, ‘আমরা এপ্রিলের ৭ তারিখ থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। তবে কিছু কাজ বাকি ছিল। যেমন অনলাইনে আবেদন, লটারি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধান কিনব। এখন এই কার্যক্রম শেষ, শিগগিরই ধান কেনা শুরু করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুনামগঞ্জে অন্য বছরের তুলনায় এবার বরাদ্দ কম এসেছে। গত বছর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার টন, এবার তা কমে হয়েছে ১৭ হাজার টন।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ সোম বলেন, ‘সুনামগঞ্জে কৃষক পরিবার রয়েছে ৪ লাখ। প্রকৃত কৃষকরা যেন সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে পারেন সেভাবেই তালিকা করে খাদ্য বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাওরের প্রকৃত কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবেন বলেন আমার বিশ্বাস। জেলার কোনও কৃষক হয়রানি হলে আমরা তাদের পাশে আছি। আমাদের সব অফিসারদের বলা আছে, একজন কৃষকও যেন হয়রানির শিকার না হন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।