হঠাৎ বুকে ব্যথা, অস্বস্তি কিংবা আচমকা হার্ট অ্যাটাক অনেক সময় এসবের পেছনে থাকে এমন একটি সমস্যা, যার কোনও আগাম লক্ষণই আমরা বুঝতে পারি না। চিকিৎসকেরা যাকে বারবার উল্লেখ করেন, সেই শব্দটি হলো ধমনিতে প্ল্যাক জমা। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখন স্পষ্ট সব প্ল্যাক এক নয়, আর এই পার্থক্য জানাটাই হতে পারে জীবন বাঁচানোর চাবিকাঠি।

প্ল্যাক হলো ধমনির ভেতরে জমে থাকা চর্বি, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য উপাদানের স্তর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি ধমনিকে সরু করে দেয় এবং রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফল হতে পারে হৃদরোগ, স্ট্রোক কিংবা আকস্মিক হার্ট অ্যাটাক। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই প্ল্যাক আবার দুই ধরনের, এবং প্রতিটির ঝুঁকি আলাদা।
সফট প্ল্যাক
বোর্ড-সার্টিফায়েড কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. জেরেমি লন্ডনের মতে, সফট প্ল্যাক হলো সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরনের প্ল্যাক। এটি মূলত চর্বিযুক্ত, প্রদাহযুক্ত এবং অস্থিতিশীল। ডা. লন্ডন বলেন, এই ধরনের প্ল্যাক যেকোনো সময় ফেটে যেতে পারে এবং হঠাৎ রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ঘটাতে পারে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো অনেক ক্ষেত্রেই কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই এটি ঘটে। তাই অল্প বয়সী বা আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ মানুষও কখনো কখনো আকস্মিক হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন।
হার্ড প্ল্যাক: দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির সংকেত
অন্যদিকে হার্ড প্ল্যাক, যাকে ক্যালসিফায়েড প্ল্যাকও বলা হয়, তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। এটি ধমনিতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পুরোনো প্ল্যাকের ফল। ডা. লন্ডনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হার্ড প্ল্যাক সাধারণত হঠাৎ ফেটে যায় না। তবে এটি ইঙ্গিত দেয় যে ধমনিতে দীর্ঘদিন ধরে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বা চর্বি জমার সমস্যা চলছে। অর্থাৎ এটি ভবিষ্যতের হৃদ্রোগ ঝুঁকির একটি শক্তিশালী সতর্ক সংকেত।
এই দুই ধরনের প্ল্যাকের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো—
* সফট প্ল্যাক নির্দেশ করে স্বল্পমেয়াদি ও তাৎক্ষণিক বিপদ
* হার্ড প্ল্যাক নির্দেশ করে দীর্ঘমেয়াদি হৃদরোগের ঝুঁকি
ডা. লন্ডনের ভাষায়, ধমনিতে ক্যালসিয়াম জমা মানে হলো হৃদরোগের প্রক্রিয়া বহুদিন ধরে চলছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ যত বেশি, আজ হোক বা ভবিষ্যতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগের নিউম মেনে চলা জরুরী। ধমনিতে কী ধরনের প্ল্যাক জমছে, তা জানা গেলে জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস ও চিকিৎসা সবকিছুই আগেভাগে ঠিক করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, ব্যায়াম ও চিকিৎসকের পরামর্শ মানে সুস্থ থাকা সম্ভব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


