রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত সোমবার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত (আজ বুধবার দুপুর ১টা) ২৯ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন আছে ৬৯ জন। তারা রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিমান দুর্ঘটনার সর্বশেষ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী, নিহত ২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১১ এবং ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন। এ ছাড়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন (পরিচয় জানা যায়নি) করে মারা গেছে।
মৃতদের নাম ও বয়সও প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যাওয়া ১১ জন হলো তানভীর (১৪), আদনান ফাইয়াজ (১৪), মেহেরীন (৪৬), বাপ্পি (৯), মাসুকা (৩৭), এ বি শামীম (১৪), শায়ান ইউসুফ (১৪), এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও নাফি (৯)।
তাদের সবার মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিএমএইচে মৃত ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তারা হলো রজনী ইসলাম (৩৭), এমডি সামিউল করিম (৯), ফাতেমা আক্তার (৯), মেহেনাজ আফরিন হুমায়রা (৯), সারিয়া আক্তার (১৩), নুসরাত জাহান আনিকা (১০), সাদ সালাউদ্দিন (৯) ও সায়মা আক্তার (৯) এবং বিধ্বস্ত বিমানের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম। এই ৯ জনের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসপাতালটিতে মৃত অন্য ৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিতে নিখোঁজ পরিবারগুলোর স্বজনদের ডিএনএ নমুনা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, পরিচয় শনাক্ত না হওয়া ৬ জনের মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) মর্গে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যে মরদেহগুলো থেকে ডিএনএ অ্যানালাইসিসের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অতি দ্রুত সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ প্রফাইলিং করা হবে।
ইতিমধ্যে প্রকাশিত আহত ও নিহতদের তালিকায় যাদের সন্তান বা স্বজনের নাম নেই, এমন নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের মালিবাগস্থ সিআইডি ভবনে গিয়ে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের উদ্দেশ্যে নমুনা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে ৯ বছরের শিশু জুনায়েত ও গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে উমায়ের নূর আসফিক নামে ১১ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া লুবানা জেনারেল হাসপাতালে অজ্ঞাতপরিচয় (বয়স উল্লেখ নেই) একজনের মরদেহ রয়েছে।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৯ জনের মধ্যে ৪১ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন শিক্ষক, একজন স্কুল স্টাফ, একজন ফায়ার ফাইটার, একজন পুলিশ, ১৪ জন সেনা সদস্য, একজন আয়া, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও অন্যান্য চারজন রয়েছেন।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব গুজব থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।
পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে : প্রধান উপদেষ্টা
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা কার্যত অসম্ভব। তিনি বলেন, কেউ নিখোঁজ থাকলে পরিবারগুলো সেটা রিপোর্ট করে, হাসপাতাল ও কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য জানায় এবং সেখান থেকে তারা তাদের প্রিয়জনদের খুঁজে পায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।