সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা পদ্মার পানির উপরিভাগে দৃশ্যমান করতে সক্ষম হয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। এছাড়া ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধারের সপ্তমদিনে আরেকটি ট্রাক উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। এ নিয়ে ডুবে যাওয়া নয়টি যানবাহনের মধ্যে সাতটি ট্রাক উদ্ধার হয়েছে। তবে পদ্মায় নিমজ্জিত ফেরি রজনীগন্ধা পুরোপুরি উদ্ধার না হলেও উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের মাধ্যমে নদীর তলদেশের মাটি থেকে উপরে তুলায় দৃশ্যমান হয়েছে ফেরি।
মঙ্গলবার(২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক এস এম আজগর আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেরিটি ডুবে যাওয়ার সময় উল্টে যায়। লিফটিং ব্যাগে বাতাস দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে ডুবে যাওয়া ফেরিটি হালকা করা চেষ্টা করার হচ্ছে। ফেরিটি হালকা হওয়ার পর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ দিয়ে ফেরিটিকে টেনে পদ্মায় ভাসানো হয়েছে। ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ভাসিয়ে তোলার ক্ষেত্রে নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দলের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছে। তবে প্রচণ্ড শীত ও নদীতে স্রোতের কারণে উদ্ধারকারী দলকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। পাম্পিংয়ের মাধ্যমে ফেরির ভেতরে বালুমাটি সরানো হচ্ছে। তবে নদীর তলদেশে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে এ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিটিতে ৯টি মালবাহী যানবাহন ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকা পড়ে ফেরিটি। পরের দিন বুধবার(১৭ জানুয়ারি) সকাল আটটার দিকে ফেরিটি নয়টি যানবাহন নিয়ে ডুবে যায়। এসময় ফেরিতে থাকা ট্রাক চালক, সহকারী ও ফেরির স্টাফসহ ২১ জন ব্যক্তির মধ্যে ২০ জনকে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ হন ফেরির সহকারী ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন কবির। তবে ফেরিডুবির ৬ দিন পর পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভাটিতে হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় পদ্মায় ভাসমান অবস্থায় তাঁর মরদেহটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। হুমায়ুন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে। তিনি পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধার সহকারী ইঞ্জিন চালক ছিলেন। গ্রামের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন(বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক(বাণিজ্য) শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ বলেন, গত বুধবার(১৭ জানুয়ারি) নয়টি যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৫ নং ঘাট পন্টুনের অদূরে ইউটিলিটি ফেরি রজনীগন্ধা ডুবে যায়। এ ঘটনায় ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ ছিলেন। তবে গতকাল সোমবার(২২ জানুয়ারি) হুমায়ুনের মরদেহটি উদ্ধার করা হয় এবং তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে উদ্ধার অভিযানের সপ্তম দিনে ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা ফেরিটিকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের মাধ্যমে টেনে উপরে তুলে ভাসানো হয়েছে। ফলে ফেরিডুবির সাতদিন পরে ফেরিটি এখন দৃশ্যমান। আর নয়টি যানবাহনের মধ্যে আজকে পর্যন্ত সাতটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুটি যানবাহনও সনাক্তকরণ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।