লাইফস্টাইল ডেস্ক : গরম মানেই লিচুর মৌসুম। ফলটি শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এর পুষ্টিগুণও ষোলো আনা। মৌসুমী ফল হিসেবে লিচু ইতোমধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করেছে। আমাদের বেশিরভাগই রসালো মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি খেতে অনেক পছন্দ করেন। এতে নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু লিচুতে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বেশি থাকে। এ কারণে অনেকের চিন্তা থাকে, ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফল খেলে কোনো ক্ষতি হবে কি না, তা নিয়ে।
এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদরা জানান, খেতে সুস্বাদু হলেও একসঙ্গে খুব বেশি লিচু খেয়ে ফেললে তার ফলটা কিন্তু ভালো না-ও হতে পারে! খাওয়াটা পরিমাণে বেশি হলে কারও কারও অ্যাসিডিটি, আবার কখনো ডায়রিয়াও হতে পারে। আর যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা লিচু হিসাব করে খাবেন। খেলে সর্বোচ্চ চারটি থেকে পাঁচটির মধ্যেই থাকুন। এ ছাড়া আর কারও জন্য লিচুতে বিধিনিষেধ নেই।
তবে চিকিৎসকদের মত, লিচু আলাদাভাবে কোনো ক্ষতি করে না। যেকোনো ফলেই কিছুটা পরিমাণ শর্করা থাকে। লিচু বেশি মিষ্টি মানে যে তাতে উপস্থিত শর্করা ক্ষতি করবে, এমন নয়।
লিচুকে মিষ্টি স্বাদ দেয় ফ্রুকটোস। এ ক্ষেত্রে বিপাকের জন্য ইনস্যুলিন প্রয়োজন পড়ে না। ফলে মেপে খেলে সমস্যা নেই বলে জানান চিকিৎসকরা। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কোনো খাবারই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ভালো নয় উল্লেখ করে তারা জানান, তবে মাঝেমধ্যে মিষ্টি ফল খেলে খুব সমস্যা হবে না।
এ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের রোগীদের মাঝেমধ্যে সকালের দিকে লিচু খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, সকালের এই সময়টাতে বিপাক হার বেশি থাকে।
অন্যদিকে পেট ভরে অন্য খাবার খাওয়ার পর কিংবা ঘুমতে যাওয়ার আগে এই ধরনের মিষ্টি ফল খেলে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
লিচুর নানা উপকারিতা
# পরিবেশ দূষণের কারণে দ্রুত শরীরে বয়সের ছাপ পড়ছে৷ লিচু শরীরের তারুণ্য ধরে রাখার মোক্ষম অস্ত্র।
# লিচুতে আছে ক্যানসার প্রতিরোধক্ষমতা। এটি ক্যানসার কোষ বিভাজনকে বাধা দেয়।
# লিচুতে থাকা উপাদানগুলো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি খেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
# লিচু হজমশক্তি বাড়ায়। সেইসঙ্গে ক্ষুধাবর্ধক হিসেবেও কাজ করে।
# সুস্থ হাড়ের জন্য লিচু অতি প্রয়োজনীয়। হাড়ের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য ওষুধের বিকল্প এ ফলটি।
# লিচু ত্বক ভালো রাখে। ব্রণ হতে বাধা দেয়। সেইসঙ্গে ত্বকের কালো দাগ দূর করার ক্ষমতা আছে লিচুর।
# লিচুতে থাকা ভিটামিন সি, নিয়াসিন, থায়ামিন চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে চুলকে দিঘল কালো করে তোলে।
# লিচুতে ক্যালরি বেশি থাকায় শরীরের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।
# লিচুর জলীয় অংশ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
# লিচুতে থাকা ভিটামিন ‘সি’-এর পরিমাণ কমলালেবুর তুলনায় ঢের বেশি। এ ছাড়া গাজরের তুলনায়ও অনেকটা বেশি বিটা ক্যারোটিন থাকে এতে। এগুলো মুখের স্বাস্থ্য এবং দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে।
# লিচুর ভিটামিন ‘এ’ রাতকানাসহ চোখের নানা রোগের প্রতিষেধকও। এ ছাড়া গরমের সময়ে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে শরীরকে রক্ষা করে লিচু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।