সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের শিবালয়ে সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পদ না পাওয়া একাধিক প্রার্থী এ অভিযোগ করেছেন।
পদ প্রত্যাশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে একজন মাদকসেবী ও একজন বিএনপি পরিবারের সন্তানকে কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ছাত্রলীগের প্যাডে সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এতে সজিবুর রহমান ইফতীকে সভাপতি করা হয় এবং আদিত্য পন্ডিত রিশাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সজিবুর রহমান ইফতীর মাদক সেবনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া পদ না পাওয়া একাধিক নেতা অভিযোগ করেন, সাধারণ সম্পাদক আদিত্য পন্ডিত রিশার আপন চাচা এস কে পন্ডিত ভজন শিবালয় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এস কে পন্ডিত ভজন বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সাথে সরাসরি জড়িত।
জানা গেছে, মাদক সেবনের অভিযোগে সজিবুর রহমান ইফতীকে প্রথমে সভাপতি পদ দিতে অস্বীকৃতি জানালেও অন্যান্য প্রার্থীদের ডেকে গোপনে দেখা করতে বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ সিফাত কোরাইশী সুমন। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আদনান রনির মাধ্যমে পদ প্রত্যাশীদের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে মোবাইল ফোন উপহার দেয়ার কথা বলে আদনান রনির মাধ্যমে একজন সভাপতি প্রার্থীর নিকট এক লক্ষ টাকা চান সুমন। এছাড়া জেলা ছত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও কলেজটির সাধারণ সম্পাদক পদের জন্যও প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলে জানান একাধিক প্রর্থী।
শিবালয় উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, সজিবুর রহমান শিবালয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছের লোক হওয়ায় ইফতীর বিরুদ্ধে প্রশাসনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ছাত্রলীগের ওই নেতা। এছাড়া নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আদিত্য পন্ডিত রিশার ইতোপূর্বে ছাত্রলীগের কোন পদ বা সদস্যও ছিলনা।
পদ না পাওয়া এক ছাত্রলীগ নেতা জানান, আমার কাছে দুইটা মোবাইল কেনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। আমি টাকাটা দেইনি বলে পদ পাইনি। পদ পাইনি তাতে কোন আফসোস নেই, একজন মাদকসেবি পদ পেয়েছে শুধু এটাই আফসোস।
এদিকে নতুন কমিটির সভাপতি সজিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফিান রিসিভ করেননি।
সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সজিবুর রহমান ইফতীর মাদক সেবনের বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগে অভিযুক্ত কারো জায়গা নেই। ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন বহন করবে না। কারো বিরুদ্ধে কোন নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তদন্ত কমিটি গঠন করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এম এ সিফাত কোরাইশী সুমনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ওই ছেলের বাবা মারা গেছে, তার মা একজন ক্যান্সারের রোগী। ওই ছেলের একটা ভিটাবাড়িও নাই। কথা বললে সাবধানে বইলেন। মানিকগঞ্জের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কেউ সম্মেলন করে কমিটি করে নাই। আমরা সম্মেলন করে কমিটি দিয়েছি। এসব আলতু-ফালতু প্যাচাল বাদ দেন। আপনাদের টাকা দিয়ে তদবির করে কাজ করাতে পারে, ওই রকম লোক আমি না। এরপর সজিবুর রহমান ইফতীর মাদক সেবনের বিষয়ে কোন মন্তব্য না করেই ফোন কেটে দেন সুমন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।