বিনোদন ডেস্ক : দেশের বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। প্রতিষ্ঠানটির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, নিহত যুবকের নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। এতিম ছিলেন বলে জানা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এই বর্বর হত্যাকণ্ড নিয়ে ইতোমধ্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এবার আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন নির্মাতা আশফাক নিপুন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় ফেসবুক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘
আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি। এই যে গতকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জল নামের এক মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ যুবককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলল, আমি ভাবি তোফাজ্জলের মা সেটা দেখতে পেলে কী করতেন?’
‘জানলাম উনি মারা গেছেন আগেই। কিন্তু এমনও তো হতে পারে তোফাজ্জলের কাছ থেকে ৩ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন উনি, ছেলেকে বাঁচাতে পারছিলেন না দেখে চুড়ান্ত অসহায় বোধ করছিলেন! হয়তো ছেলেকে ভাত খেতে দেখে আশান্বিত হচ্ছিলেন, যে ছেলের কিছু হবে না আর, এই যাত্রায় বেঁচে যাবে? হয়তো এরপরও নির্যাতনের মাত্রা দেখে আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ করছিলেন ছেলেটার যেন মৃত্যু হয়, ছেলেটা যেন আর কষ্টের ভেতর দিয়ে না যায়?’
তিনি লিখেছেন, ‘আবরার ফাহাদের মায়ের কথাও ভাবি। আবরারকে যখন স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হচ্ছিল তখন তার মা পাশে থাকলে কী কষ্টটা পেতেন! বিশ্বজিতের মায়ের কথা ভাবি, ছেলেকে কোপাকুপি করার সময় সামনে থাকলে কী করতে পারতেন তিনি ছেলেকে বাঁচাতে? রাজশাহীতে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী পঙ্গু মাসুদের কথা ভাবি, যখন সে পানি চেয়েও পানি পাচ্ছিল না তখন তার মা সেখানে থাকলে কি ছেলের জন্য পানি আনতে ছুটাছুটি করতেন? নাকি সরে গেলে ছেলেকে মেরে ফেলবে এই ভয়ে পানিও আনতে যেতেন না? বা গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদারের মৃত্যু? সেই সময় যদি তার মা আশপাশে থাকতেন, তাহলে কী ছেলেকে বাঁচাতে পারতেন?’
এ নির্মাতা লিখেছেন, ‘আমি শুধু সেসব মায়েদের কথা ভাবি। যারা ৯ মাস গর্ভে ধারণ করা থেকে সন্তান জন্ম দিয়ে তার পুরোটা জীবন সেই সন্তানকে লালন-পালন করে, বড় করে একদিন জানতে পারেন তার ছেলেকে বা মেয়েকে কেউ মেরে ফেলেছে। কী যায় তাদের ভেতর দিয়ে, সেটা ভাবি। তল পাই না। অন্ধকার লাগে সব।’
সবশেষ ‘মহানগর’ খ্যাত নির্মাতা প্রশ্ন তোলেন, ‘আমি আমার মায়ের কথা ভাবি। ভাবি আমাকেও যদি কেউ এভাবে দলবেঁধে মেরে ফেলে, তাহলে আমার মায়ের কেমন লাগবে? কেমন অসহায় বোধ করবে সে? আপনারাও ভাবেন কি?’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।