লাইফস্টাইল ডেস্ক : ছোট থেকেই ডিমের পোচের প্রেমে পাগল কিশোরবাবু। তাই সারাদিনে দিনে অন্তত একটা ডিমের পোচ খাওয়া তাঁর চাই-ই চাই। এই কাজটা না করলে তাঁর আবার রাতে ঠিকমতো ঘুম আসে না।
তবে কিশোরবাবুর পছন্দের সঙ্গে একবারেই মিল নেই তাঁর দাদা নয়নবাবুর। বরং নয়নবাবু ডিমের অমলেট খেতেই ভালোবাসেন। এমনকী অমলেটের গুণগান গাইতে গাইতে ভাইকে আহত করার খেলাতেই তিনি অত্যন্ত পারদর্শী। আর দুই ভাইয়ের পছন্দের এমন বৈপরিত্যের জন্য মাঝেমধ্যেই শরগরম হয়ে ওঠে বাড়ির ড্রইংরুম।
তাই এই সমস্যার একটা মিমাংসা করার তাগিদ নিয়েই আমরা যোগাযোগ করেছিলাম কলকাতার একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মীনাক্ষী মজুমদারের সঙ্গে। আসুন তাঁর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া যাক, সুস্থ থাকতে ডিমের পোচ না অমলেট, কোনটা খাওয়া বেশি উপকারী!
‘সানডে হো ইয়া মনডে, রোজ খাও আন্ডে’
একটি ডিম থেকে মোটামুটি ৭৩ ক্যালোরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এই সস্তার পুষ্টিকর খাবারে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, কোলিন, জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালশিয়ামের মতো একাধিক জরুরি খনিজ এবং ভিটামিন। তাই দেহে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে চাইলে নিয়মিত ডিম খেতেই হবে। তাতেই হাতেনাতে উপকার পাবেন বলে আশাবাদী পুষ্টিবিজ্ঞানীরা।
ডিমের পোচ না অমলেট, কোনটা খেলে উপকার পাবেন বেশি?
এই প্রশ্নের উত্তরে মীনক্ষী মজুমদার জানালেন, ডিমে সালমোনেল্লা নামক একটি ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে যা কিনা ডায়ারিয়া বাঁধানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই ডিম খেতে হলে তা অমলেট করে বা সিদ্ধ করেই খাওয়া উচিত। এই কাজটা করলেই ডিমে মজুত এই জীবাণুর ভবলীলা সাঙ্গ করে দেওয়া সম্ভব হবে। অপরদিকে ডিমের পোচ খেলে এই জীবাণুর ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই স্বাস্থ্যগুণে ডিমের পোচ এবং অমলেটের মধ্যে অমলেটকেই কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখতে হবে।
অমলেটেও রয়েছে বিপদ
মীনাক্ষী মুজমদারের কথায়, অমলেট বানানোর সময় প্রচুর পরিমাণে তেল দেওয়া হয়। আর তাতেই এই খাবারের ক্যালোরি ভ্যালু অনেকটা বেড়ে যায়। তাই ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল বা হাই প্রেশার থাকলে রোজ রোজ অমলেট খাওয়া চলবে না। এমনকী ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকলেও এই খাবার এড়িয়ে চলুন। তবে আপনারা চাইলে মাঝেমধ্যে বেশ কিছু সবজি সহযোগে অল্প তেলে অমলেট বানিয়ে খেতেই পারেন। তাতে বিপদের ফাঁদে পড়ার তেমন একটা আশঙ্কা থাকবে না বললেই চলে।
গুণের রাজা সিদ্ধ ডিম
সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেতেই হবে। এক্ষেত্রে যে কোনও সুস্থ ব্যক্তি দিনে একটি গোটা ডিম খেতেই পারেন। তবে ডায়াবিটিস, হাই প্রেশার বা কোলেস্টেরল থাকলে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ১টা করে গোটা ডিম খান। আর বাদবাকি দিনগুলি ডিমের সাদা অংশ খেতেই পারেন। তাতেই আপনার শরীরে প্রোটিন সহ একাধিক পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মিটে যাবে।
কারা ডিম খাবেন না?
ডিমে অ্যালার্জি থাকলে তা এড়িয়ে চলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। নইলে পেটে খারাপ থেকে শুরু করে অ্যালার্জি সহ একাধিক জটিল অসুখের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে। শুধু তাই নয়, ক্রনিক কিডনি ডিজিজে ভুক্তভোগীরাও চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই ডিম খান। নইলে যে সমস্যার শেষ থাকবে না।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।