জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালের গৌরনদীতে রাস্তায় পাওয়া মাজেদা বেগম মর্জিনা (৭০) তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে গেছেন। ফেসবুকে ছবি দেখে ৬ মাস আগে হারিয়ে যাওয়া মায়ের সন্ধান পান তার স্বজনরা।
মাজেদা বেগম গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মেয়ের ঘরের নাতনি নিলুফা বেগম (৩৮) ও তার মামা মমিন গাজী (৫০) এসে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। স্বজনদের পেয়ে বেজায় খুশি মাজেদা বেগম।
নাতনি নিলুফা বেগম জানান, তার নানি বিধবা, গরিব ও অসহায়। তিনি ২ কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী। মাজেদা বেগম ঢাকায় ভিক্ষা করতেন। তার পুত্র শাহেআলম পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। ৬ মাস আগে তিনি (মাজেদা বেগম) হারিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে মাজেদা বেগমকে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার কাহিনী সঠিক নয় বলে তিনি জানান।
এদিকে গত সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার বাটাজোর এলাকার বাংলা লিংক টাওয়ারের কাছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ থেকে ওই বৃদ্ধাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বৃষ্টিতে ভিজা ও জ্বরে আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে (মাজেদা) স্থানীয়রা সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি এখন অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বাটাজোর বাংলা লিংক টাওয়ারের পাহারাদার আ. করিম জানান, টাওয়ারের গার্ড রুমে তিনি ও তার স্ত্রী বসবাস করছেন। ওই বৃদ্ধাকে অচেতন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় টাওয়ারের কাছে মহাসড়কের পাশে পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে তাদের কাছে রেখে যায়। পরবর্তীতে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বৃদ্ধাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন মো. শিপন নামের এক ব্যক্তি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধার জ্ঞান ফেরার পর তিনি নিজের নাম মাজেদা বেগম, স্বামীর নাম চাঁন মিয়া মৃধা ও ছেলের নাম শাহেআলম মৃধা, গ্রাম-নলখোলা, উপজেলা-দশমিনা, জেলা-পটুয়াখালী ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেননি। তিনি পরিবারের কারো বা অন্য কারো মোবাইল নাম্বার ও জানতেন না। তার পুত্রবধূ তাকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে ওই স্থানে তাকে রেখে চলে যান বলে মাজেদা বেগম জানিয়েছিলেন।
গৌরনদী পৌরসভার টিকাশার এলাকার বাসিন্দা ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের লাইব্রেরিয়ান মো. শিপন বলেন, ছবিসহ বৃদ্ধার করুন কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি নিজ উদ্যোগে মাজেদা বেগমকে চিকিৎসার জন্য সোমবার দিবাগত গভীর রাতে তাকে (মাজেদা) গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। অন্য কোন উদ্দেশ্যে নয়, মানবিক কারণে ওই বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি।
এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বৃদ্ধা মাজেদা বেগমকে নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। প্রথমে বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি তার সঙ্গে পরিবার তাকে খুঁজে পেয়েছে জেনে খুশি হয়েছি বলেও তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।