সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ: চিকিৎসা বিষয়ক কোন রকম ডিগ্রী বা সনদ না থাকলেও সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে সর্ব রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন ভূয়া ডাক্তার জহিরুল ইসলাম (জুয়েল)। তার এমন প্রতারণার খবর পেয়ে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জের সহকারি পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল। অভিযানে ভূয়া ডাক্তার জহিরুলের প্রতরাণার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা যায়, জহিরুল ইসলাম (জুয়েল) মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাঁচধারা গ্রামের মো: আরজুর ছেলে। এলাকাবাসীর কাছে চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। তবে সে কবে, কোথায় চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেছে তা কেউ জানেন না। এসএসসি পাশ করেই বনে গেছেন সর্ব রোগের চিকিৎসক। খুলে বসেছিল একাধিক চেম্বার। ৫০০ টাকা ভিজিট নিয়ে জাপানি প্রযুক্তির তৈরি “কোয়ান্টাম রিসোর্স ম্যাগনেটিক এনালাইজার” নামের একটি মেশিনের মাধ্যমে স্ক্যানিং করে দেহের সমস্ত রোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থাপত্র দেয় সে।
শিবালয়ের শিমুলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ঢাকিজোড়া গ্রামের বারেক মোল্লার বাড়ি ও হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গরুর হাটের পাশে নূরজাহান ও নাফিসা ফার্মেসিতে নিয়মিত রোগী দেখে সে। ফরিদপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকা থেকে রোগী আসে তার কাছে।
গত ৬ জুলাই রোগী সেজে ঝিটকা গরুর হাটের পাশে নাফিসা ফার্মেসিতে জহিরুলের চেম্বারে যান এই প্রতিবেদক। ৪০০ টাকা ভিজিট নিয়ে প্রতিবেদকের কিডনি, লিভার, হার্টসহ পুরো দেহের পার্ট বাই পার্ট ভালো-মন্দের বর্ণনা দেয় সে। এরপর সে অনুয়ায়ী প্রেসক্রিপশন লিখে দেয়।
পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল। এ সময় তিনি জহিরুলের চিকিৎসা বিষয়ক সনদ দেখতে চান। কিন্তু সে কোন প্রকার সনদ দেখাতে পারেনি। পরে তাকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়। এ সময় প্রতারণার মাধ্যমে আর কখনো কাউকে চিকিৎসা সেবা দেবে না মর্মে মুচলেকা দেয় জহিরুল।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, কোন প্রকার ডিগ্রি ছাড়াই সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিল জহিরুল। গত ৬ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী তাকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধে সময় বেধে দেওয়া হয় তাকে। আজ সোমবার তার কাছ থেকে জরিমানার টাকা আদায় করা হয়। এরপর কখনো চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা করবে না মর্মে মুচলেকা দেয় সে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।