বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমান বিশ্ব কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল। এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, ডকুমেন্ট সংরক্ষণ রাখা যায়। কিন্তু আমরা আজ যে কম্পিউটার ব্যবহার করছি, অদূর ভবিষ্যতে এই কম্পিউটার থাকবে না। কারণ, আমাদের ট্রাডিশনাল ট্রানজিস্টর বেসড সিস্টেম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এটি কোয়ান্টাম মেকানিক্যালের সূত্রগুলো ব্যবহার করে ডাটা অপারেশন করতে পারে। এর থিওরিক্যাল মডেলের নাম কোয়ান্টাম টিউনিং মেশিন।
আসলে কোয়ান্টাম কম্পিউটারেও বিট থাকে যাকে আমরা কোয়ান্টাম বিট বলতে পারি। যেমন ধরা যাক, একটি ৮ বিট কম্পিউটারে ২৫৬ রকম পজিশন থাকতে পারে। একক সময়ে তো ৮ বিটের কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেই ২৫৬ কিউবিট পজিশন থাকে। মানুষের স্নায়ু কোষ যেভাবে গঠিত হয় এবং স্নায়ু কোষগুলো পরস্পরের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ করে সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে ভবিষ্যতের কম্পিউটার তৈরি হবে।
বিজ্ঞানীরা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি কখনো আসল স্নায়ু কোষের মতো কাজ করে না। ইউনিভার্সিটি অব পি-মাউথের কম্পিউটার বিজ্ঞানী টমাস ওয়েনেকারস স্নায়ু কোষের গঠন পদ্ধতি ও কার্যক্রম অনুকরণ করে কম্পিউটার তৈরির চেষ্টা করছেন।
ওয়েনেকারস বলেন, স্নায়ু কোষের গঠন পদ্ধতি অনুকরণ করে কম্পিউটার তৈরি করলে সেন্সরি নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী হবে। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্টিভ ফারবার স্নায়ু কোষের গঠন পদ্ধতি অনুকরণ করে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছেন। ম্যানচেস্টারের এ বিজ্ঞানী বলেন, আমি চাই। অদূর ভবিষ্যতে এমন কম্পিউটার তৈরি করতে, যা আচরণ ও অনুধাবন করবে মানুষের মতো। ভবিষ্যতে এ ধরনের কম্পিউটারের প্রয়োজন প্রচ-ভাবে অনুভূত হবে।
ট্র্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ভাষ্য, ট্রান্সক্রিপ্টর নামের জৈব ট্রানজিসটরটি ডিএনএর মধ্যকার এনজাইমের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর এ ধরনের বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা সম্ভব নতুন কম্পিউটার।
সাধারণ কম্পিউটারের অন্য দুটি মূল নীতি হচ্ছে তথ্য মজুদ ও বিনিময়। ট্রান্সক্রিপ্টর বানানোর জন্য প্রাকৃতিক প্রোটিনের একটি অংশকে বেছে নেন গবেষকরা। কোষের মূল কাজ করে থাকে প্রোটিন আমিষ। এ প্রোটিন আমিষগুলোকে ব্যবহার করে ডিএনএ অনুর আরএনএ পলিমিরাস অংশে এনজায়িমের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হন তারা। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা এমন কম্পিউটার তৈরি করবে, যা হবে মানুষের মতো অনুভূতিসম্পন্ন।
এটি নিজে দেখেশুনে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে। বিস্ময়কর শোনালেও সত্য যে, এতে থাকবে মানুষের মতো পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের অনুভূতি শনাক্ত করার প্রযুক্তি। ফলে কম্পিউটারটি দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ এবং স্পর্শের অনুভূতি সহজে বুঝতে পারবে।
কম্পিউটারের প্রাণ মাল্টিপ্রসেসর। এই প্রসেসর তথা কম্পিউটার চিপ বানানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। এমন ক্ষুদ্র যন্ত্র দিয়ে আর কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করে না। আর এ ছোট জিনিসটার ওপরই কিন্তু আজকের তথ্য-প্রযুক্তি তথা মানব সভ্যতা ধীরে ধীরে নির্মিত হচ্ছে। ডুয়াল কোরের চিপ পৌঁছে গেল চার কোরের চিপে।
মাল্টকোর মেশিনের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো অন্তর্নিহিতভাবেই এরা সিগন্যাল কোর মেশিনের চাইতে শক্তি ব্যবহারে বেশি দক্ষ। এখন হাজার কোরের চিপও বোধ হয় আর বেশি দূরে নয়। তবে কল্পনা হলেও এর কিছু বাস্তব ইঙ্গিত রয়েছে। কারণ, মানুষ এক সময় টাচস্কিনের কথা স্বপ্নেও ভাবেনি। আর সে কল্পনার ওপর ভিত্তি করে নতুন স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।