আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এই প্রথম মানব পু.রু.ষা.ঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর এ ক্ষুদ্র কণার বিস্তার ও সম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
এই গবেষণার অংশ হিসেবে পাঁচ জন পুরুষের যৌ.না.ঙ্গে.র টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে চারটিতে সাত ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। বুধবার এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে ‘আইজেআইআর: ইয়োর সেক্সুয়াল মেডিসিন জার্নাল’-এ।
মাইক্রোপ্লাস্টিক মূলত পলিমারের টুকরা, যার আয়তন এক মাইক্রোমিটার থেকে শুরু করে পাঁচ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
এর চেয়ে ছোট যে কোনো পলিমারই ‘ন্যানোপ্লাস্টিক’ হিসেবে বিবেচিত, যা পরিমাপ করা হয় এক মিটারের একশ কোটি ভাগের এক ভাগ হিসাবে। এর উৎপত্তি ঘটে আকারে বড় প্লাস্টিক ভেঙে ফেলার মাধ্যমে, যেগুলো রাসায়নিক উপায়ে বা কায়িক শ্রমের মাধ্যমে ছোট ছোট টুকরায় রূপান্তর করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্যে কিছু ক্ষুদ্র কণা মানবদেহের প্রধান অঙ্গগুলোর বিভিন্ন কোষ ও টিস্যুতেও আক্রমণ করতে সক্ষম। এমনকি মানবদেহে এদের উপস্থিতি ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার প্রমাণও মিলেছে।
এ গবেষণার প্রধান লেখক ও প্রজনন বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রানজিথ রামাসামি সিএনএন’কে বলেছেন, এজন্য তিনি সহায়তা নিয়েছেন আগের এক গবেষণা থেকে, যেখানে মানুষের হৃদযন্ত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকার প্রমাণ মিলেছিল। আর ‘ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি’তে কাজ করার সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, পুরুষাঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে তিনি মোটেও বিস্মিত নন। কারণ এটি হৃদযন্ত্রের মতোই ‘রক্তনালীওয়ালা’ একটি অঙ্গ।
এইসব নমুনা সেইসব অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, যারা ‘ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা ইডি নামের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আর তারা ২০২৩ সালের অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে এর চিকিৎসা অর্থাৎ ‘পেনাইল ইমপ্লান্ট সার্জারি’র জন্য ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি’র হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে ‘কেমিকাল ইমেজিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এইসব নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। এতে উঠে আসে, নমুনা দেওয়া পাঁচ জন ব্যক্তির মধ্যে চারজনের যৌ.না.ঙ্গে.র টিস্যুতেই মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে।
গবেষণা অনুসারে, এতে সাতটি ভিন্ন ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত করা গেছে, যেখানে সবচেয়ে প্রচলিত মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল ‘পলিথিলিন টেরেফথালেট (পেট)’ ও ‘পলিপ্রপাইলিন (পিপি)’।
রামাসামি বলেন, এখন যেহেতু পুরুষাঙ্গে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে, তাই এর সঙ্গে ইডি’র মতো রোগের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
“মাইক্রোপ্লাস্টিকের সঙ্গে ইডি’র যোগসূত্র আছে কি না, তা আমাদের শনাক্ত করতে হবে। আর এর বাইরেও এমন কোনো স্তর আছে কি না, যা প্যাথলজির কারণ হতে পারে বা কী ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক প্যাথলজিক, সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে,” বলেন তিনি।
এ গবেষণার বিভিন্ন ফলাফলের বিস্তৃত প্রভাব নিয়ে রামাসামি বলেছেন, তিনি আশা করেন, এটি “মানব অঙ্গে বহিরাগত দেহের উপস্থিতি নিয়ে মানুষকে আরও সচেতন করবে ও এ বিষয়ে আরও গবেষণা করার উৎসাহ দেবে।”
এ বিষয়ে টক্সিকলজিস্ট ম্যাথিউ জে. ক্যাম্পেন সিএনএন’কে বলেন, গবেষণাটি বেশ রোমাঞ্চকর, যা মানবদেহে প্লাস্টিকের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে।
“প্লাস্টিক সাধারণত মানবদেহের বিভিন্ন কোষ ও রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটায় না। তবে এগুলো দেহের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের অনেক প্রক্রিয়াতেই শারীরিকভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যার মধ্যে আছে ইরেকশন ও শুক্রানু তৈরির মতো বিষয়ও।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।