আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ত্রিপুরায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খবর এনডিটিভির।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৬০০টির বেশি পরিবারের ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ রাজ্যটির ৮টি জেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া বন্যায় এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে ফোনে কথা বলেছেন এবং রাজ্যের বিরাজমান বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছেন। তিনি তার রাজ্যে অতিরিক্ত ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) কর্মীদের মোতায়েন করার দাবি করেছেন।
কর্মকর্তাদের মতে, দক্ষিণ ত্রিপুরা, গোমতি এবং খোয়াই জেলায় ১০ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় ত্রিপুরায় অবিরাম বর্ষণে ভূমিধস ও ডুবে যাওয়ার পৃথক ঘটনায় এক পরিবারের তিন সদস্যসহ অন্তত নয়জন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন।
এনডিটিভি বলছে, ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) ত্রিপুরায় ১০টি লোকাল ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে। এনএফআরের একজন মুখপাত্র বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে গোমতি জেলায় রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষ ট্রেনগুলোর যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
ত্রিপুরা রাজ্য প্রশাসনের অনুরোধের পর আসাম রাইফেলসের চারটি ব্যাটালিয়ন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে। একজন প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বলেন, আসাম রাইফেলস বন্যায় আটকে পড়া নাগরিকদের উদ্ধারে বেসামরিক প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার এই বন্যার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ায় হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে ফেনীর অবস্থা বেশ খারাপ। ফেনীর অনেক গ্রাম পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া গোমতী নদীর ভারত অংশের পানি বেড়ে তা বাংলাদেশের কুমিল্লায় প্রবেশ করছে।
ত্রিপুরাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বোরক টাইমস ও ত্রিপুরা টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার প্রায় ৩১ বছর পর ত্রিপুরা কর্তৃপক্ষ ডুম্বুর বাঁধের স্লুইস গেট খুলে দিয়েছে। সবশেষ ১৯৯৩ সালে এই বাঁধের স্লুইস গেট খোলা হয়েছিল।
গোমতী জেলার জেলাশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা এক্স হ্যাণ্ডেলে জানিয়েছেন, গোমতী নদীতে পানিস্তর বেড়ে যাওয়ার ফলে ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের পানিস্তর বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছিল। বাঁধ বাঁচাতে গেট খুলে পানি ছেড়ে দিতে হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।