ধর্ম ডেস্ক : রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। রমজান মাসকে তিনটি বৈশিষ্ট দ্বারা বিন্যাস করা হয়েছে। আজ থেকে শুরু হলো হাদিসে বর্ণিত রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত বা ক্ষমার দশক। মাগফিরাতের দশক সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য মহান আল্লাহর এক বড় অনুগ্রহ। তাই এ সময় সব রোজাদারকেই নিজেদের গুনাহ মাফে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা জরুরি।
ইসলাম ধর্মে মাগফিরাতের সময় বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এই মাসে যখন একজন রোজাদার সারা বছরের নেকি ও পুণ্যের ঘাটতি পূরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও সাধনা চালিয়ে যান এবং মাগফিরাতের ১০ দিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তখন আল্লাহ তার গুনাহর খাতা মাফ করে দেন।
রমজান মাসের মাগফিরাত সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে যা বলা হয়েছে, মাগফিরাত শব্দের অর্থ হলো ক্ষমা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের অসংখ্য গুণাবলির মধ্যে অন্যতম একটি গুণ হলো তিনি ক্ষমাশীল। এ জন্য আল্লাহতায়ালার অপর একটি নাম হলো ‘আল-গাফুর’। আর ‘গাফুর’ শব্দের বাংলা অর্থ হলো ‘ক্ষমাশীল’। বান্দা যেন তার সারা বছরের সব গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে, এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন রমজান মাসের দ্বিতীয় দশককে মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভের দিন হিসেবে ধার্য করেছেন।
তাই রমজানের দ্বিতীয় ১০ দিন অর্থাৎ মাগফিরাতের ১০ দিন আমাদের করণীয় হলো আল্লাহর সর্বোচ্চ ক্ষমালাভের জন্য তওবা করা। কারণ, এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সকল মানুষ ভুলকারী। আর ভুলকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো যারা তওবাকারী।’ (বায়হাকি)
শুরু হলো মাগফিরাতের ১০ দিন
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাক, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪০)
এ মাসে আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করলে, গরিব-দুঃখীদের প্রতি দান-সদকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে, নিজে সব ধরনের খারাপ কাজ পরিহার করলে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার, তাসবিহ-তাহলিল, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া-ইস্তেগফার করলে, মহান আল্লাহ তা অবশ্যই কবুল করেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এ মাসে চারটি কাজ অবশ্য করণীয়। প্রথমটি হলো কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করা, দ্বিতীয়টি হলো অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা। তৃতীয় ও চতুর্থ হলো জান্নাত লাভের আশা করা ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা করা।
কিন্তু তার পরও যে ব্যক্তি রমজান মাস এবং মাগফিরাতের ১০ দিন পেয়েও আল্লাহর কাছ থেকে নিজের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য তওবা এবং ইস্তেগফার করেনি, তাদের মতো অভাগা আর কেউ নেই।
এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়ে নিষ্পাপ হতে পারল না, তার মতো হতভাগ্য এ জগতে আর কেউ নেই।’
তাই রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের এ সময়টাতে সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানের তাওবা-ইসতেগফার করা জরুরি। কারণ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে এ কথা প্রমাণিত সত্য, ইসতেগফার আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয়। যারা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইসতেগফার করবে, আল্লাহতাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।