জুমবাংলা ডেস্ক : শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত চর এলাকা কাঁচিকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা গ্রামে নলকূপ স্থাপন করার সময় প্রাকৃতিক গ্যাস বের হয়ে আসছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, নলকূপ স্থাপনের জন্য ৬০/৬৫ ফুট গভীরে খনন করার পরই পানির বদলে উঠতে থাকে গ্যাস।
বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমায়। এ ঘটনার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। প্রতিদিনই এলাকার যুবকরা বিভিন্ন প্রকার খাবার রান্না করে খাচ্ছেন এবং সে দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছেন।
ফসলি জমিতে সেচের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপনের ব্যবস্থা করছিলেন আবু সালাম বেপারী। সেই নলকূপের পাইপ দিয়ে পানি বের না হলেও বের হচ্ছে গ্যাস। নলকূপের জন্য তৈরিকৃত গর্ত থেকে বের হওয়া গ্যাসে আগুন জ্বালিয়ে বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ডিম ভাজি রান্না করে খাচ্ছেন গ্রামবাসী।
সম্প্রতি এমন ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই স্থানে গ্যাসের মজুদ রয়েছে কি না তা জানতে ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন। ঘটনাটি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ মাথা ভাঙা এলাকার।
স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আবু সালাম বেপারী নামে এক কৃষক কৃষিজমিতে পানি সরবারহের জন্য গত ৪ নভেম্বর সকালে জমির এক পাশে নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করেন। শ্রমিকরা ৪০ ফুট পাইপ মাটির ভেতর ঢুকিয়ে দিলেও পানির দেখা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন কর্মরত শ্রমিকরা। পরে আরও ২৫ ফুট পাইপ স্থাপনের পরেও পানি না পেলে তারা অন্যত্র নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করেন।
একদিন পরে নলকূপ স্থাপনের জন্য করা গর্ত থেকে বুঁদ বুঁদ শব্দ শোনা যায়। বুঁদ বুঁদ শব্দ আর গ্যাসের গন্ধে চারপাশ ভরে গেলে স্থানীয় একজন দিয়াশলাই দিয়ে গর্তের মুখে ধরলে আগুন জ্বলতে থাকে। এরপর বিষয়টি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীরা ওই গর্তের মুখে অস্থায়ী চুলা বসিয়ে বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ডিম ভাজি রান্না করতে শুরু করেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়।
কৃষক আবু সালাম বেপারী বলেন, নলকূপের জন্য করা গর্ত থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী সেখানে অস্থায়ী চুলা স্থাপন করে রান্নাবান্না করছেন। উৎসাহী জনতা এই গ্যাস দিয়ে রান্না করলেও বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বারকে বিষয়টি জানিয়েছি।
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, গ্রামবাসী নূলকূপ থেকে বের হওয়া গ্যাসে রান্না করছে। কিন্তু যে স্থানটিতে গ্যাস বের হয়েছে। সেই স্থানটি পনের বছর আগেও পদ্মা নদীর অথৈ পানির নিচে ছিল। এই অল্প কয়েক বছর আগে চর জেগে ওঠা স্থানে গ্যাস থাকার কথা নয়। আমার মনে হচ্ছে অন্য কোনো কারণে এমন গ্যাস বের হচ্ছে। তারপরও নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাস বের হওয়ার ঘটনা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস আমাদের দেশের একটি সম্পদ। দেশের কোথায় মুজুদ রয়েছে আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। এখানে যে গ্যাসের মজুদ রয়েছে সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। আমরা লিখিতে আকারে পেট্রোবাংলাকে জানিয়েছি। আশা করি, এ বিষয়ে ওনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যদি ওখানে ঝুঁকি থাকে তাহলে আশেপাশে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।