জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশাল নগরেরর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকায় ঈদের ছুটিতে ‘আলম মনজিল’ নামক ভবনের একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ফ্ল্যাট থেকে স্বর্ণালংকারসহ ফ্রিজের মাছ-মাংস ও বাথরুমের কল, লাইটসহ মূল্যবান মালামাল চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
ওই ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তা আবু তাহের। ঈদের ছুটিতে সপরিবারে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে এ চুরির ঘটনা ঘটে।
এদিন দুপুর ২টার দিকে দরজার নিচ দিয়ে পানি বেয়ে সিঁড়িতে আসায় পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি বাড়িওয়ালা শামসুল আলম ও তার স্ত্রীকে জানান। তখন বাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে এসে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন এবং ভাড়াটিয়া আবু তাহেরকে খবর দেন।
আবু তাহের বলেন, ঈদের আগের দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। চুরির সংবাদ পেয়ে শুক্রবার বিকেলে বাসায় এসে দেখতে পাই ঘরের ভেতরের জিনিসপত্র ছড়ানো-ছেটানো।
তিনি আরও বলেন, বাড়ি যাওয়ার আগে রান্নাঘরে মসলা রাখার কৌটার ভেতরে চেইন ও কানের দুলসহ দেড় ভরির ওপরে স্বর্ণালঙ্কার রেখে যায় আমার স্ত্রী। আর আলমারির ভেতরে সংসার খরচের ২২ হাজার টাকা রাখা ছিল। কিন্তু চোরেরা পাকের ঘরের সেই মসলার কৌটা থেকে স্বর্ণালঙ্কার, আলমারির তালা ভেঙে নগদ টাকা, ফ্রিজের ভেতরে থাকা মাছ-মাংসের প্যাকেট, বিভিন্ন কক্ষের লাইট, এমনকি বাথরুমের পানির ট্যাপ (কল), পুশ ও লেদ পাইপ পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে।
আবু তাহের বলেন, ট্যাপগুলো নিয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে ট্যাংকির পানি বের হয়ে পুরো ঘর তলিয়ে যায় এবং জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। আর আলমিরার ভেতরে থাকা বিভিন্ন সার্টিফিকেটসহ কাগজপত্রও বিছানায় ও পানিতে ফেলে লণ্ডভণ্ড করায় সেগুলোও পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
দরজার তালা ভেঙে চোরচক্র বাসায় ঢুকেছে জানিয়ে আবু তাহের বলেন, ‘আট মাস আগে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে এই ফ্ল্যাটে উঠেছি। ইতোপূর্বেও এখানে চুরির ঘটনা ঘটেছিল এবং থানাও অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু কেউ আজ পর্যন্ত ধরা পড়েনি
এ বাড়িতে তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা আছে, অথচ আগেরবার চুরির ঘটনার পর ফুটেজ দেখতে চাইলে মালিক বলেছিলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। আর এখন চুরির ঘটনার পর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের কথা বললে জানিয়েছেন, সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
বাড়িওয়ালার স্ত্রী আয়েশা বেগমের দাবি গত ডিসেম্বর মাসে তাদের নিজেদের এবং সামনের বাসা চুরি হয়। আর তখন সিসি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে গেলে আর তা ঠিক করা হয়নি।
তিনি বলেন, বার বার ক্যামেরার তার ছিঁড়ে ফেলায় বিরক্ত হয়ে তা আর মেরামত করা হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আলম মনজিলের মালিক শামসুল আলম বলেন, বারবার ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে চুরি হয় আর কোনো ফ্ল্যাটে চুরি হয় না। তিনি বাসায় ওঠার পর থেকে এ নিয়ে তিনবার চুরি হয়েছে। কিন্তু এর আগে কখনও আমার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেনি।
তবে বাড়িটির অন্যান্য বাসিন্দা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ঘটনার দিনই বাড়ির পাঁচতলার এক ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে চোরেরা ঢুকলেও কিছু খোয়া যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। শুধু মালামাল তছনছ করে রেখে গেছেন তারা।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুর হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার আগের করা দুটি জিডিও তদন্ত করে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডের আশপাশের এলাকা বিশেষ করে নগরের বটতলা ও গোড়াচাঁদ দাস রোড এলাকায় কয়েকটি লুটের ঘটনা ঘটেছে। কোতোয়ালি মডেল থানাধীন এলাকার এসব স্থান ঘিরেই বটতলা পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থান রয়েছে। তারপরও অপরাধপ্রবণ এলাকায় পরিণত হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে স্থানীয়রা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।