জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের উত্তর জনপদের কৃষিপ্রধান জেলা নওগাঁ। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে উত্তরের শস্যভাণ্ডার নামেও পরিচিত এ জেলা। এখানে সব ধরনের ফসল ও শস্য উৎপাদন হলেও দেশের মোট উৎপাদিত ধানের সিংহভাগই হয় এ জেলায়। তবে এ জেলার আত্রাই উপজেলায় ধান, ভূট্টাসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ বেশি হলেও দিন দিন গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে কয়েক বছরে ধীরে ধীরে এ উপজেলায় কমেছে গম চাষ।
গম লাভজনক ফসল হলেও কৃষকেরা বলছেন আগ্রহ হারানোর পেছনে অন্যতম কারণ উৎপাদন খরচের তুলনায় মুনাফা না পাওয়া। এদিকে কৃষি অধিদপ্তর মনে করছে, অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে ভূট্টার অধিক ফলন ও মুনাফা হওয়ায় গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হলেও সেটা এবার বেড়ে ৪৫০ হেক্টরে।
আত্রাই উপজেলায় দিন দিন গমের চাষ ক্রমাগতভাবে কমে যাচ্ছে। মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী থাকলেও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, এমনকি ফলন কম হওয়ার কারণে গম চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন কৃষকরা। নানাবিধ কারণে এ উপজেলার গম চাষ হুমকির মুখে পড়েছে। বিগত দিনে এ উপজেলায় গম চাষে কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও বর্তমান সময়ে গম চাষে কৃষকরা অনাগ্রহী। এ উপজেলার কৃষকরা মনে করেন গম চাষের চেয়ে অন্য ফসল চাষ করে তুলনামূলকভাবে অনেক লাভবান হওয়া যায়। সেজন্য গমের পরিবর্তে অন্য ফসল চাষ করছেন।
উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক নাইম হোসেন বলেন, আমি বিগতদিন ভূট্টা চাষ করতাম। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী গম চাষ করেছি। বর্তমানে আমার ফসলের অবস্থা খুব ভালো। আশা করছি ফলনও ভালো পাবো।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ আলী বলেন, আমি সাধারণত ধান ও ভূট্টার আবাদ বেশি পরিমানে করে থাকি। কিন্ত এবার গমের আবাদও করেছি। জমিতে এসে ফসল দেখলে মনটা জুড়িয়ে যায়। আগামী বছরে আমি সরকারী সহযোগিতা পেলে আরো বেশি জমিতে গমের চাষ করবো।
এছাড়া অন্যান্য উপজেলার একাধিক কৃষক জানান, সরকারিভাবে তারা সহযোগিতা পেলে ধান চাষের পাশাপাশি গম চাষ করতে পারবেন। ধান চাষের উপর কৃষকদের আগ্রহ ও ফলন বৃদ্ধি করতে যেমন বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে, একইভাবে কৃষকদের গম চাষের উপর প্রশিক্ষণ দিলে চাষে আগ্রহী হবেন কৃষকরা।
উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের তারাটিয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান জনান, এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় গমের আবাদ অনেকটা বেশি হয়েছে। আশা করছি গমের বাম্পার ফলন হবে। কৃষকদের যেন কোনো প্রকার সমস্যা না হয়, তাই কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা নিয়মিত কৃষকদের পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপশ কুমার রায় জানান, সব ধরনের ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি, যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পায়। বিশেষ করে বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে গম চাষ কমে গেছে। প্রদর্শনীর আয়োজন করে কিছু চাষিকে সার ও গমের বীজ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এ বছরে গম চাষের উপর কৃষকের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। গম চাষের উপযোগী জমিতে উচ্চ মূল্যের সবজি চাষ ও ভূট্টা হওয়ার বিষয়টিও গম চাষ কমে যাওয়ার একটি কারণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।