লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রতিটি ওষুধের যেমন উৎপাদন তারিখ থাকে তেমনি মেয়াদোত্তীর্ণেরও তারিখ থাকে। ওষুধের মেয়াদ পার হলে তাকে সেটিকে এক্সপায়র্ড ধরা হয়। সেই এক্সপায়ার্ড ওষুধ খেতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই ওষুধ খাওয়া, আর বিপদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানো, দুইই সমান। তাই ওষুধ খাওয়ার আগে চোখ-কান খোলা রাখা ছাড়া আর কোনও গতি নেই।
তবে সবসময় তো আর ওষুধের এক্সপায়রি ডেট দেখে ওষুধ খাওয়া সম্ভব হয় না। বরং কোনও সমস্যা দেখা দেওয়ার পরই চটজলদি প্রয়োজনীয় ওষুধ মুখে পুরে দেওয়াই সাধারণের অভ্যাস। আর তারপর ওষুধের প্যাকেটের গায়ে চোখ রাখলে দেখা যায় যে সেই ওষুধের মেয়াদই পেরিয়ে গিয়েছে।
আর এমন ঘটনা ঘটার পরই ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হতে শুরু করে দেয়। এখন কী হবে? শরীর আরও খারাপ হয়ে যাবে না তো? ইত্যাদি নানা চিন্তা ভিড় করে মনে। তাই ওষুধের কিছু করে ওঠার আগেই চিন্তায় চিন্তায় অধিকাংশেরই প্রাণ যায়। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমন ওষুধ খেলে কি সত্য়িই শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়?
এসব নিয়ে কথা বলেছেন, ভারতের সল্টলেকের মণিপাল হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন এবং ক্লিনিকাল কেয়ার মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. দীপঙ্কর সরকার।
১. এক্সপায়ার্ড ওষুধ খাওয়া উচিত নয়
ডা. সরকার জানান, ওষুধ খাওয়ার আগে তার এক্সপায়ারি ডেট দেখে নেওয়া উচিত।। এই ডেটটা দেখার পরই ওষুধ খেতে হবে। এটাই হল ওষুধ খাওয়ার প্রথমপাঠ। বিশেষত, যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওষুধ নেন, তারা অবশ্যই এক্সপায়ারি ডেট দেখার পরই ব্যবহার করুন। আর যখন দোকান থেকে তখন তো এক্সপায়ারি ডেট চেক করে নেওয়া মাস্ট!। তাহলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।
২. এক্সপায়ার্ড ওষুধ খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
এই ধরনের ড্রাগের কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। ফলে এমন ওষুধ খেলে কোনও উপকারই পাবেন না। এক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ধরুন আপনার জ্বর এসেছে। এই সময় আপনি ভুল করেই একটা এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়া প্যারাসিটামল খেয়ে ফেললেন। তাতে বড় কোনও ক্ষতি হবে না ঠিকই। কিন্তু এই ওষুধ আপনার জ্বর কমাতেও পারবে না। অর্থাৎ সোজা ভাষায় এক্সাপায়ারি ওষুধ খেলে তার কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। ফলে কোনও লাভ হয় না।
৩. প্রাণ নিয়ে কি টানাটানি পড়ে যেতে পারে?
এক্সপায়ারি ওষুধ খাওয়ার পরই অনেকের হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। ভাবেন এই বুঝি প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে গেল। তবে এমন কোনও বড় বিপদ হয় না বলেই জানালেন ডা. দীপঙ্কর সরকার। তিনি বলেন, কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এক্সপায়ারি ওষুধ খাওয়ার পরে সাধারণত কোনও শারীরিক সমস্যা হয় না।। শুধু যেই ওষুধটা খাচ্ছেন, সেটা কাজ নাও করতে পারে। এটাই হল মূল সমস্যা। তাই অহেতুক ভয় না পেয়ে সচেতন থাকুন। আর এমন ভুল এড়িয়ে চলুন।
৪. এই কাজটুকু করুন, তাতেই সুফল মিলবে
ওষুধ ঠিকমতো সংরক্ষণ না করলেই সমস্যার আশঙ্কা থাকে। আসলে ওষুধ সঠিকভাবে না রাখলে তাতে ব্যাকটেরিয়া আস্তানা গেড়ে বসতে পারে। আর এমন ওষুধ খেলেই কিন্তু বিপদ কয়েকগুণ বাড়বে। এমনকী রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করারও প্রয়োজন পড়তে পারে। তাই ওষুধ সবসময় পরিষ্কার, শুষ্ক ও ঠান্ডা জায়গায় রাখুন। আর ওষুধের প্যাকেট যাতে ছিঁড়ে না যায় তাও নিশ্চিত করুন। এতেই কমবে বিপদের আশঙ্কা।
৫. এক্সপায়ার্ড ওষুধ খেয়ে ফেললে কী করণীয়?
ডা. দীপঙ্কর সরকার জানালেন, ওষুধ যদি ঠিকমতো সংরক্ষণ করে রাখা হয়, তাহলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। এক্ষেত্রে বড়জোর ওষুধটি কাজ করবে না। তাই কিছুক্ষণ দেখার পর সমস্যা না কমলে, আরও একটি ওষুধ খেয়ে নিন। এতেই দেখবেন কাজ হয়েছে। আর যদি খুব উৎকণ্ঠা হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
তথ্যসূত্র: এই সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।