পলাতক ও সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি প্রধান শুভেন্দু অধিকারী।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর শুভেন্দু বলেন, “এই রায় দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের নির্দেশে। এটি কার্যকর হবে না।” হিন্দুত্ববাদী শুভেন্দু আরও বলেন, “শেখ হাসিনা প্রগতিশীল। শেখ হাসিনা উগ্রবাদীদের সঙ্গে ছিলেন না।”
এদিকে স্বৈরাচার হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তার আশ্রয়দাতা ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নির্বাসনে থাকা হাসিনার রায় নজরে নিয়েছে ভারত।”
তবে ভারত হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটি স্পষ্ট করেননি রণধীর। তিনি শুধু জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তারা কাজ করতে প্রস্তুত আছেন।
রণধীর বলেন, “ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সর্বদা এই লক্ষ্যে সকল অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করব।”
এর আগে, সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার এই সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেছে। রায় ঘোষণার সময় জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবীরা ছাড়াও জুলাই আগস্টে নিহতদের কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে আদালত বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। একটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্য দুটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই দিনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রায় ঘোষণার পর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারতের কাছ থেকে ফেরত চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনও দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।
সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



