লাইফস্টাইল ডেস্ক : ভুল খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা, অনিশ্চিত ঘুম ইত্যাদি নানান কারণে পেটের গোলযোগ দেখা দিয়ে থাকে। পেট ব্যথা, অ্যাসিডিটি হয় না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। জীবনযাপন প্রণালীর মান উন্নত করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু এমন কিছু খাবার-দাবার আছে, যার সাহায্যে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
নিউট্রিশানিস্ট ও আয়ুর্বেদিক প্র্যাক্টিশনার জুহি কাপুর নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এমন কিছু খাবার-দাবার সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, যা নিয়মিত খেলে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুল জীবনযাপন প্রণালীর উপজাত উপাদান হল অ্যাসিডিটি। দেরি করে ঘুমানো, অসময় খাওয়া, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনি অ্যান্টাসিডের দাসে পরিণত হবেন।’
ঝাল, মশলাদার খাবার বা দুটি খাবারের মাঝে সময়ের বিশাল ব্যবধান থাকলে গ্যাসট্রিক গ্রন্থিতে অতিরিক্ত অ্যাসিড ক্ষরণের ফলে পেটে অ্যাসিডিটি হয়ে থাকে। জুহি কাপুর এমন তিনটি খাবারের বিষয় উল্লেখ করেছেন যা অ্যাসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে। এগুলি হল—
কলা
সকালে একটি কলা খান। এটি ‘আপনার অর্ধেক অ্যাসিডিটি সারিয়ে তুলবে।’
তুলসির বীজ
এক গ্লাস পানিতে ১ বা ২ চা চামচ তুলসীর বীজ ভিজিয়ে রেখে দিন। এগুলি ফুলে উঠলে পান করুন। তবে মনে রাখুন এই বীজগুলি ঠান্ডা প্রকৃতির হয়। জুহি কাপুর জানিয়েছেন, ‘পিরিয়ডস বা সর্দি, কাশি থাকলে এটি পান করবেন না।’
ডাবের পানি
‘বেলা ১১টার সময় এই অসাধারণ অ্যালকালাইন পানি পান করুন। দেখবেন কী ভাবে আপনার অ্যাসিডিটি দৌড়ে পালায়’, বলেন তিনি।
আবার এ ছাড়াও আরও কিছু খাবার আছে যা অ্যাসিডিটি রোধে সাহায্য করতে পারে। সেগুলি হল—
বাটারমিল্ক বা দইয়ের ঘোল
এতে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড পেটের অ্যাসিডিটিকে শান্ত করতে সক্ষম। খাবার খাওয়ার পর এক গ্লাস বাটার মিল্ক পান করতে পারেন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য এতে গোলমরিচ ও জিরে গুঁড়োও দেওয়া যেতে পারে।
মৌরী
খাবার খাওয়ার পর মৌরী খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় অনেকের মধ্যেই। এটি অ্যাসিডিটি কমাতে পারে। মৌরী দেওয়া চা-ও পান করা যেতে পারে। এর ফলে পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং বদহজমের সম্ভাবনা কমে।
ছোট এলাচ
ছোট এলাচ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। পেটে যে খারাপ অ্যাসিড উৎপন্ন হয় তা দূর করতেও সাহায্য করে এলাচ। গ্যাস অনুভব হলেই ২টি ছোট এলাচ গুঁড়ো করে পানিতে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তার পর ঠান্ডা করে সেটি পান করুন।
গুড়
এতে উপস্থিত ম্যাগনেশিয়াম অন্ত্র মজবুত করে এবং হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। তাই খাবার খাওয়ার পর গুড় খাওয়ার অভ্যাস করুন।
তরমুজ
ক্যান্টালোপ, হানিডিউ এবং তরমুজে খুব সামান্য অ্যাসিড থাকে। এটি অ্যাসিড রিফ্লাক্স সাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়ামও থাকে, যা পেটে অ্যাসিড ক্ষরণ কম করে ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যাও কমে।
ওটমিল
এতে উপস্থিত দ্রাব্য ও অদ্রাব্য ফাইবার অ্যাসিডিটির লক্ষণ দূর করতে সাহায্য করে। ওটমিল খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরতিও থাকে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
আদা
এটি অ্যাসিড রিফ্লাক্সের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঘরোয়া ওষুধ। বহুযুগ ধরে নানান গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যার চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান এর গুণাগুণ বৃদ্ধি করে।
অ্যাসিডিটি দূর করার আরও কিছু উপায়
১. অল্প অল্প খাবার খান এবং ঘন ঘন খান।
২. খাদ্য তালিকা থেকে অতিরিক্ত প্রোটিন বাদ দিন।
৩. সপ্তাহে মাত্র ২ থেকে ৩ বার আমিষ খাবেন। তার চেয়ে বেশি নয়। অন্ন, শস্য বাদ দেবেন না।
৪. পরিশোধিত খাবার খাবেন না। কারণ এগুলিতে ভিটামিন বি, ই ও ফাইবার থাকে না।
৫. স্ট্রেস নেবেন না। কারণ স্নায়ুতন্ত্র আবার পাচন তন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত। অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়ার ফলে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেবে এবং এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হজম শক্তি প্রভাবিত হবে।
৬. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান।
৭. বজ্রাসন করুন।
৮. ইতিবাচক চিন্তাভাবনা আনুন এবং আনন্দে থাকুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।