কাজী শাহেদ : রাজশাহীতে বেড়েছে সাইবার অপরাধ। দুই বছর আগেও যেখানে দিনে একটি মামলা হতো না, সেখানে এখন চার-পাঁটটি করে মামলা হচ্ছে। অনেকে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন অভিযোগ নিয়ে।
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়া এবং ফেসবুক হ্যাক করে ব্লাকমেইলের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। হালে এতে যুক্ত হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা। রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক, অনলাইন, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাজশাহী বিভাগে অপরাধ ঘটানোর পরিমাণ বেড়েছে।
রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বলেন, ‘দুই বছর আগেও যেখানে গড়ে প্রতিদিন এক-দুটি মামলা আসতো এ আদালতে, এখন গড়ে অন্তত তিন-চারটি মামলা আসছে। এখন প্রতিদিন ছয়-সাতটি মামলা আদালতে উঠছে। এই হারে সাইবার অপরাধ দিন দিন বাড়ছে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে আদালতের বিচক্ষণতায় মামলাজট তেমন নেই।’
আরএমপির সাইবার ইউনিট সূত্র বলছে, কয়েক বছরের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার অপরাধের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সবচেয়ে বেশি অপরাধ হচ্ছে ফেসবুকের মাধ্যমে। এর পরে আছে বিকাশ, নগদ ও রকেট হ্যাক করে প্রতারণা। গড়ে এখন আরএমপির সাইবার ইউনিটে রাজশাহীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঁচ-সাতটি অপরাধের অভিযোগ আসছে, যেগুলো তদন্ত করে আসামিকে খুঁজে বের করার কাজ করে থাকে সাইবার ইউনিট।
আরএমপির সাইবার ইউনিটের অপারেশনাল এক্সপার্ট (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) উৎপল চৌধুরী বলেন, ‘সাইবার অপরাধ-সংক্রান্ত অপরাধ এখন বেড়েছে আগের চেয়ে। আর এসব অপরাধের অধিকাংশ অপরাধী থাকে আড়ালে। মূলত সেসব অপরাধীকে চিহ্নিত করে দেওয়াই হলো আমাদের কাজ। আর এ কাজটি করতে আমাদের কয়েকটি ধাপ পার হতে হয় অতিরিক্ত সতর্কতার সঙ্গে। কারণ এ ধরনের অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমনি অপরাধীরাও অতিরিক্ত গোপন কৌশল ব্যবহার করছে।’ তিনি জানান, ‘গত বছর আরএমপির সাইবার ইউনিটে অভিযোগ ছিল ৩ হাজার ২৪৪টি। এর মধ্যে সাইবার অপরাধ-সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল ৮৮৮টি। সেগুলোর মধ্যে অনলাইন, ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ ছিল ৫০৭টি। এর মধ্যে সাইবার ইউনিট ৪৮৫টি অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করে। এ ছাড়া নগদ, বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আসে ৩৮১টি। তার মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন হয় ৩৫৭টির। ২০২২ সালে এ ইউনিটে অভিযোগ জমা হয় ৩৬৮৩টি। এর মধ্যে সাইবার-সংক্রান্ত অভিযোগ জমা হয় ৭৮০টি। এসব অভিযোগের মধ্যে ফেসবুক, অনলাইন, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ ছিল ৪৪৭টি। আর নগদ, বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগ ছিল ৩৩৩টি। আনুপাতিক হারে ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে সাইবার অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অভিযোগ জমা পড়েছে ১৫০টির মতো। গড়ে প্রতিদিন ৫-৬টি করে অভিযোগ আসছে। সেই হিসেবে রাজশাহী বিভাগে ২০২২ ও ২০২৩ সালের চেয়ে চলতি বছরে এ ধরনের অপরাধ বেড়েছে। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।