জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে ২০১৩ সালে প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর গত ১১ বছরে সেখান থেকে দেশের ২৭ জেলায় সাপটি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলে এ সাপের বিস্তার বেশি।
অলস প্রকৃতির এ সাপ নিজে থেকে তেড়ে এসে কখনো কামড়ায় না। বিরক্তের একপর্যায়ে দ্রুতগতিতে ছোবল দেয়। তবে সব দংশনে বিষ দেয় না। একটি প্রাপ্তবয়স্ক সাপের মধ্যে থাকা ১৫০-২০০ মিলিগ্রাম বিষের মধ্যে সাপটি কতটুকু বিষ দেবে, তা নির্ভর করে সাপের মর্জির ওপর।
এখন পর্যন্ত এই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুর হার ২৯ শতাংশ। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, মৃত্যুর কারণ দেরিতে হাসপাতালে আসা। মোট রোগীর ৬৭ শতাংশই প্রথমে ওঝার কাছে যান। পরে হাসপাতালে আসেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রকল্প চট্টগ্রামের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের দুই গবেষক এসব তথ্য জানান। তারা হলেন সেন্টারের মুখ্য গবেষক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ ও সহযোগী গবেষক মিজানুর রহমান।
অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, বিশ্বের অন্য সব রাসেলস ভাইপারের মতো আমাদের দেশেরটাও বিষধর কোবরা বা ক্রেইট সাপ। বিষধর অন্য সাপ যদি কাউকে কামড় দেয়, দেড়-দুই ঘণ্টার মধ্যে বিষক্রিয়া হয়ে রোগী প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। শ্বাস নিতে না পেরে মারা যেতে পারে। কিন্তু রাসেলস ভাইপারের ক্ষেত্রে এ সময়টা আরও বেশি। এ সাপের বিষক্রিয়া শুরু হবে, রক্ত জমাট বাঁধাবে, পরে বিভিন্ন অঙ্গ ড্যামেজ করে ফেলবে। তাই রাসেলস ভাইপার কামড়ালে রোগীর চিকিৎসায় সময় পাওয়া যায়।
গবেষক মিজানুর রহমান বলেন, রাসেলস ভাইপারের বিষক্রিয়ায় যে অঙ্গ ড্যামেজ হয়ে যায়, অ্যান্টিভেনম সেই আক্রান্ত অংশকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে পারবে না। যে ভেনমটুকু এখনো রয়েছে সেটাকে নিষ্ক্রিয় করতে পারবে। কারও শরীরে সাপের ১০ গ্রাম ভেনম ঢুকেছে। তার মধ্যে তিন গ্রাম ব্যবহার হয়েছে। অ্যান্টিভেনম যখন তার শরীরে দেওয়া হবে, তখন সে বাকি ৭ গ্রামের বিরুদ্ধে কাজ করবে। বাকি ৩ গ্রামকে নিষ্ক্রিয় করতে পারবে না।
এ গবেষক বলেন, রাসেলস ভাইপারের ভেনম সাইটোটক্সিন ও হেমোটক্সিন ধরনের। সাইটোটক্সিনের কাজ হচ্ছে শরীরের কোষগুলোকে ড্যামেজ করে দেওয়া। আর হেমোটক্সিন রক্ত জমাট বাঁধার উপাদান নষ্ট করে দেয়। হেমোটক্সিক সাপ নিউরোটক্সিক সাপের চেয়ে ধীরে আক্রান্ত করে বলে রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য অনেকটা সময় পাওয়া যায়। চিকিৎসায় রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
– দেশ রূপান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।