লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্ষাকাল আসলেই ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি, জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। শিশু থেকে বয়স্ক কেউই অসুস্থতার হাত থেকে রেহাই পান না।
বর্ষার এই সময়ে ঘন ঘন বৃষ্টি ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণে জমে থাকা পানিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি ঘটে। আর কোনভাবে বাচ্চারা এর সংস্পর্শে এলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সর্দি-কাশি, জ্বর তো আছেই। এসবের পাশাপাশি দেখা দেয় ডায়রিয়া, টাইফয়েডের মতো নানা পানিবাহিত রোগ। এছাড়া ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মোট ভয়াবহ রোগতো আছেই।
তাই বর্ষার এই মৌসুমে বাড়ির শিশুদের ছোট-বড় নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে বাবা-মায়েদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। সন্তানদের সুস্থ রাখতে তাঁদের কিছু দিকে নজর ফেরাতে হবে।
বর্ষায় রোগ বাড়ে কেন?
১. বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকে বেশি। যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। এই সময় বর্ষার জমা পানিতে, রাস্তার উন্মুক্ত খাবার এবং পানিতে নানা জীবাণু ঘোরাফেরা করে। আর বাচ্চারা এসবের সংস্পর্শে আসলে সংক্রমিত হতে পারে। এই সময় বাইরের পানি ও খাবার খেলেও পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. এ সময়ে মৌসুম পরিবর্তনের কারণে প্রতিনিয়ত তাপমাত্রাতেও হেরফের দেখা যায়। তাতে সর্দি-কাশি, গলা ব্যথার মতো অসুখ-বিসুখ হতে পারে সন্তানের।
৩. বর্ষাকালে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে ডিম পারে মশা। ফলে বাড়ির আশেপাশে টায়ার, ডাবের খোলায় জমা জলে আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে এডিস ও অ্যানোফিলিস মশাদের। আর মশার কামড়ে বাচ্চাদের এই সময় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
শিশুকে সুস্থ রাখতে যা করবেন
১. বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন
বর্ষাকালে বিভিন্ন স্থানে জমা পানিই মশাদের জন্মস্থান হয়ে ওঠে। তাই বাড়ির আশপাশে যেন পানি জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এমন কোনও জিনিস বাড়ির আশেপাশে রাখবেন না যেখানে বৃষ্টির পানি জমতে পারে। বাড়ির চারপাশ সপ্তাহে একদিন ব্লিচিং দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এই সময় সন্তান খেলতে গেলে অবশ্যই সুতি বা আরামদায়ক কাপড়ের ফুলহাতা জামা-প্যান্ট পরিয়ে দিন। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানাবেন। এমনকী বাড়িতে মশাদের উৎপাত রুখতে জানাল-দরজায় নেট লাগিয়ে দিতে পারেন।
২. খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দিন
বর্ষাকালে ডায়ারিয়া এবং টাইফয়েডের মতো নানা পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা বাড়ে। তাই সবসময় পানি ফুটিয়ে বা ফিল্টার করেই নিজেরা এবং সন্তানকে খাওয়ানো উচিৎ। এছাড়া খাবার সবসময় ঢেকে রাখতে হবে। নয়তো তাতে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে।
বর্ষাকালে বাজার থেকে আনা শাক-সবজি, ফল-মূল গরম পানিতে বা লবণপানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতেও হবে। এইভাবে জীবাণুমুক্ত সংক্রমণের ঝুঁকিও কিছুটা কমবে। বাইরের খাবারে জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকে। আর সেসব সংক্রমিত খাবার খেলে পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকী এই সময় বাইরের পানীয়ও সন্তানের জন্য ঠিক নয়। তাই বর্ষাকালে বাইরের খাবার থেকে সন্তানকে দূরে রাখাই ভালো।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দিকে নজর দিন
এই সময় চিকিৎসকেরা সন্তানদের গরম খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন গরম স্যুপ, দুধ খাওয়ান সন্তানকে। এছাড়াও ইমিউনিটি বাড়াতে তাদের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, সবজি খাওয়ানো উচিৎ। এতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ফলে ছোট বড় নানাবিধ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত থাকবে আপনার সন্তানের শরীর।
হিরো সেন্টিনিয়াল লঞ্চ হল বাজারে, কিন্তু শুধুমাত্র ১০০ ক্রেতা কিনতে পারবেন
সন্তানকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন
বর্ষার সময় বাইরে থেকে আসলেই সন্তানকে হাত-মুখ ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলুন। এমনকী বাইরের হাতে খাবার ছুঁতেও দেবেন না। নিশ্চিত করুন সে যেন খাওয়ার আগেও ভালো করে হাত পরিষ্কার করে নেয়। এছাড়া এই মৌসুমে অ্যান্টিসেপটিক সাবান দিয়ে সন্তানকে গোসল করান। তাতে জীবাণু থাকবে দূরে। আর সন্তানও থাকবে সুস্থ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।