লাইফস্টাইল ডেস্ক : ভুঁড়ি শুধু বিব্রতকর নয়; স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ায়। সুস্থ থাকতে ভুঁড়ি কমাতে হবে। কিন্তু কীভাবে কমাবেন, তা নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় ভোগেন।
দুশ্চিন্তা ছাড়ুন। বেশি বেশি শর্করা, চিনিযুক্ত খাবার, ট্রান্সফ্যাট খেলে যেমন ভুঁড়ি বাড়ে, তেমনি উপযুক্ত খাবার খেলে, কিছু অভ্যাস মেনে চললে কমেও।
বায়োজিন কসমেসিউটিক্যালসের পুষ্টিবিদ মুনিয়া মৌরিন মুমু জানান, পেটের মেদ কমাতে কার্যকরী খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। এ খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থাকে এবং ক্ষুধার অনুভূতি কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। শরীর ফাইবার হজম করতে পারে না। এ ধরনের খাবার মল-মূত্রের সাহায্য বেরিয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াতে ক্যালরি খরচ বেশি হয় বলে মেদ কমে আসে।
উপকারী পানীয়: কোল্ড ড্রিংস ও মিষ্টি জাতীয় পানীয় ওজন বাড়ে। কিন্তু বিভিন্ন ফলমূল ও মশলা দিয়ে তৈরি ডিটক্স ওয়াটার পান করলে ভুঁড়ি কমে। সেই সঙ্গে কমে ওজনও। ডিটক্স ওয়াটার শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। শরীর থেকে এই অশোষণকৃত টক্সিন বেরিয়ে গেলে, পেটের মেদ ঝরতে শুরু করে। পেটের চর্বি কমাতে গ্রিন টি তথা সবুজ চা সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে বলে জানান মুনিয়া মৌরিন মুমু।
দই: গরমে দই খেলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এ দই আপনার ভুঁড়ি কমিয়ে আপনাকে ফিট হতে সহায়তা করবে। মিষ্টি দই নয়, খেতে হবে টক দই। চর্বিহীন দুধ দিয়ে দই তৈরি করতে হবে। গবেষণা বলছে, টকদই ভুঁড়ি কমাতে সহায়ক।
আপেল সিডার ভিনিগার: পেটের মেদ ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের চর্বি কমাতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনিগার। এতে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড দ্রুত মেটাবলিজম বাড়ায়। তবে এটি খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ সবার জন্য এ ভিনেগার উপকারী নাও হতে পারে।
পর্যাপ্ত প্রোটিন: সুস্থ থেকে মেদ কমানোর জন্য খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন রাখতে হবে। ডিম-দুধ-মাছ-মাংস খেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের বাদামও খাদ্যতালিকায় রাখুন। এসব খাবার মেটাবলিজম বাড়ায়।
শাক-সবজি ও ফলমূল: ভুঁড়ি কমাতে খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল রাখুন। শাক-সবজি ও ফল হজম ক্ষমতা ও বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়।
ওটস: ভুঁড়ি কমাতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণের ফাইবার পেতে ওটস খেতে পারেন। ওটস খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। ওটসের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বাদাম মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে ভুঁড়ি কমার পাশাপাশি রক্তে চিনির পরিমাণ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
যেসব অভ্যাস রপ্ত করতে হবে
১. আনমনে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। দ্রুত খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে খেতে হবে। ধীরে ধীরে খাবার খাওয়াকে বলে মাইন্ডফুল ইটিং। বড় প্লেটের পরিবর্তে ছোট প্লেটে খাবার খাওয়া শুরু করুন। আর ওজন কমাতে গিয়ে কোনো একবেলা খাবার বাদ দেওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন।
২. সারাদিন শুয়ে বসে না থেকে কর্মচাঞ্চল্য বাড়ান। সময় নিয়ে হাঁটুন। নড়াচড়া করুন। অলসতা পরিহার করুন।
৩. রাত জেগে থাকা, অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন বদলে নিন। দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপকে বিদায় দিন। নয়তো ভুঁড়ি, শরীরের বিভিন্ন অংশের মেদ কমবে না।
৪. মিষ্টি জাতীয় খাবার, কোল্ড ড্রিংস ও এ জাতীয় পুষ্টিহীন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৫. জিমে যেতে না পারলেও, ঘরে বসেই সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম। যেমন পুশআপ, পুলআপ, প্ল্যাঙ্ক, স্কোয়াট ইত্যাদি অনুশীলন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।