লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্ষা আসতেই গরমের হাত থেকে কিছুটা রেহাই মিলেছে ঠিকই কিন্তু স্বস্তি কি মিলেছে? চুলে হাত দিলেই গোছা গোছা চুল উঠছে? আর তা দেখেই ভয়ে বুক দুরুদুরু! সৌন্দর্যের সঙ্গে জুড়ে থাকে মাথার চুল। প্রতি দিন আঁচড়ানোর সময় বা শ্যাম্পু করার সময় যদি একসঙ্গে অনেক চুল ওঠে ,কারই বা মাথার ঠিক থাকে?
কেন এমন হয়?
বর্ষায় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। যার ফলে ঘামও বেড়ে যায়। চুলের গোড়ায় ঘাম জমলে, বা দীর্ঘক্ষণ ভিজে থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। চুলের গোড়া আলগা হয়ে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায়। অনেকেরই সারা বছর চুল পড়ার সমস্যা না থাকলেও, বর্ষায় বেড়ে যায়। অনেক সময় হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেও কিন্তু চুল ঝরতে পারে।
কী ভাবে সমাধান?
চুল পড়া বন্ধ করতে, গোড়া শক্ত করতে নিয়মিত পরিচর্যা যেমন জরুরি, তেমনই প্রয়োজনীয় বিশেষ কিছু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা। সঠিক খাবার ও যত্নেও সমস্যার সমাধান না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোন ধরনের খাবার ও পুষ্টির প্রয়োজন?
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চুল-ত্বক, শরীর ভাল রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড খুব জরুরি। ফ্ল্যাক্স, চিয়া সিড্স, আখরোট খেলে এর অভাব দূর হবে। এ ছাড়াও ম্যাকারেল, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই ধরনের মাছ খাওয়া গেলে ভাল, না হলে রুই, কাতলা, পমফ্রেট-সহ যে কোনও মাছই খাদ্য তালিকায় রাখুন। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের বৃদ্ধিতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। কড লিভার অয়েলের ক্যাপসুল পাওয়া যায়। প্রয়োজন মতো তা-ও খাওয়া যেতে পারেন।
কারি পাতা
কারি পাতা ও নারকেল তেলে ফুটিয়ে চুলের যত্নে ব্যবহারের রেওয়াজ আছে। তবে চুলে মাখার পাশাপাশি খাবারেও কারিপাতা রাখুন। উপমা থেকে যে কোনও সব্জিতে কারিপাতা, সরষে ফোড়ন দিলে স্বাদ বদলে যায়। দই-ভাতেও কারিপাতা ফোড়ন দিয়ে খেতে পারেন। এতে থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস, বিটা ক্যারোটিন যা চুলের সু-স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। অন্তত ৭-৮ টি কারিপাতা নিয়মিত খেলে চুল ভাল থাকবে।
আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিড
মোচা, থোরে প্রচুর পরিমাণ আয়রন আছে। এ ছাড়া রকমারি শাক-সব্জি যেমন পালং, নটে শাক, বিন্স, গাজর, সিম, কপিতেই থাকে অনেক ধরনের ভিটামিন। ভিটামিন বি থেকে পাওয়া যায় ফোলিক অ্যাসিড। আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিড চুলের বৃদ্ধি ও জেল্লা বাড়াতে খুব দরকার।
প্রোটিন চুলের ঝরে পড়া বন্ধ করতে প্রোটিন খুব জরুরি। শরীর মজবুত রাখতেও প্রোটিনের বিকল্প নেই। প্রোটিনের অভাব পূরণে মাছ, মাংস, ডিম খেতে হবে। এছাড়া ডাল, সোয়াবিন, তোফুতেও প্রচুর ভিটামিন থাকে।
সঠিক পরিচর্যা
অনেকেই স্নান করে চুল শুকনোর আগে চুল বেঁধে অফিসে আসেন বা কাজে বেরিয়ে যান। দিনভর গোড়া ভিজে থাকলে চুল পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। প্রথমেই এই ধরনের অভ্যাসে ইতি টানতে হবে।
সপ্তাহে ২-৩ দিন মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করতে হবে।
সারাদিন পর এসে চুল ভাল করে আঁচড়ে নিতে হবে। বিশেষত ঘুমনোর আগে। তবে জট ছাড়াতে গিয়ে গোড়ায় যেন বেশি চাপ না পড়ে দেখতে হবে।
চুল পড়া বন্ধ করতে খুব জরুরি তেল মাখা। অনেকেই চিপচিপে হওয়ার ভয়ে তেল মাখেন না। এটা একদম ঠিক নয়। নারকেল তেল, আমন্ড তেল, অলিভ অয়েল, প্রয়োজন মতো যে কোনও তেল বেছে নিতে পারেন। তেলে মেথি দানা ও কারি পাতা ফুটিয়ে মাখতে পারেন। আমলকি থেঁতো করেও তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাখতে পারেন।
চুল বেশি ঝরলে তেল অল্প গরম করে তুলো বা আঙুলের ডগা দিয়ে মাথার তালুতে লাগিয়ে দিন। একদম হালকা ভাবে ৫ মিনিট মাসাজ করুন। তবে চুল ঝরা নিয়ন্ত্রণে এলে, মাসাজের সময় বাড়িয়ে ১০-১৫ মিনিটও করতে পারেন।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। হরমোনের ভারসাম্য বা অন্য গুরুতর কারণে চুল পড়া শুরু হলে সঠিক চিকিৎসা জরুরি। ঘরোয়া উপায়ে কাজ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।