স্পোর্টস ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে অনেক রকমের আলাপ আছে। কেউ একে ভালো বলেন তো, কেউ একে খারাপ বলেও অভিহিত করেন। কিন্তু আধুনিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। ব্যক্তির চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণার পরিচয় পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে। কেউ নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে চাইলেও এই মাধ্যমের সরণাপন্ন হন।
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন গড়ে ওঠার পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। যে কারণে তখনকার সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যেন আন্দোলনকারীরা একসাথে হতে না পারে।
তখনকার সময়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত, তরুণদের আইডল হিসেবে পরিচিত প্রতিটি মানুষের কাছে নৈতিক সমর্থন চেয়েছিলো আন্দোলনকারীরা। পুলিশের নির্বিচার গুলিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিবেক নড়ে গিয়েছিলো বিবেকবান মানুষদের। রাস্তায় নামতে না পারলেও তাদের সবাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সংহতি প্রকাশ করেছিলো।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এ দেশের কিশোর-তরুণ-যুবকদের আইডলে পরিণত হয়েছিলেন। যদিও গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি একপক্ষের হয়ে যান। তবুও, নির্বিচার গণহত্যায় মানুষের বিবেক যেভাবে নড়ে উঠেছিলো, সবাই ভেবেছিলো সাকিবের বিবেক নড়ে উঠবে। গণহত্যার বিপক্ষে অবস্থান নেবেন তিনি। ছাত্র-জনতার নৈতিক এবং যৌক্তিক দাবিগুলোকে সমর্থন জানিয়ে অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা স্ট্যাটাস হলেও দেবেন।
কিন্তু সবাই আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলো, সাকিব এ নিয়ে ছিলেন পুরোপুরি চুপ। মুখে যেন কুলুপ এঁটে বসেছিলেন। বরং, ফেসবুকে ঘুরে বেড়ানোর ছবি দিয়ে তিনি যেন আন্দোলনকারীদের উপহাসই করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে কিছুসংখ্যক ভক্ত-সমর্থক ছাড়া দেশের বিশাল অংশের তরুণ-যুবকদের কাছে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হন। যার ফলে শেষ টেস্ট খেলার জন্য দেশেও ফিরে আসতে পারেননি। দেশে ফেরার জন্য নিজের ফেসবুক ওয়ালে দুঃখ প্রকাশ করে দেয়া স্ট্যাটাসেও মন গলেনি বিক্ষোভকারীদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে আজ মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাকিবসহ অনেক ক্রিটারের স্ট্যাটাস না দেয়ার প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেখানে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ভয়ের কারণে ফেসবুকে পোস্ট দেননি কি না? এমন কিছু জানতে চাইলে শান্ত বলেন, ‘এরকম কোন কিছু না। আগামী কাল (সোমবার) একটা টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। আমরা সবাই জানি এখানে উনি (সাকিব) শেষ টেস্ট খেলতে পারলে খুব ভালো হতো। ফোকাসটা ওই জায়গায় আনা হয়েছে যেন আমরা টেস্ট ম্যাচটা জিততে পারি।’
এ সময় ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেয়া নিয়ে নিজের উষ্মাও প্রকাশ করতে দেখা যায় শান্তকে। তিনি বলেন, ‘যত কথা বলব এখন কোন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা সবাই জানি কেন উনি আসতে পারছে না। এখন বর্তমান সময়ে যে রকম অবস্থা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেই সব সমাধান হয়ে যায়। আমিও ভাবছি প্রতিদিন একটা করে স্ট্যাটাস দেব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।