ধর্ম ডেস্ক : ঈদ উপলক্ষে আমাদের দেশে নতুন টাকা কেনাবেচার প্রচলন রয়েছে। বেশিভাগ মানুষ ঈদে সালামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট ক্রয় করে থাকেন। তবে নতুন নোট কিনতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। যেমন : এক হাজার টাকার নতুন নোট বিক্রি করা হয় এক হাজার ২০ টাকায়। নতুন নোট কেনাবেচার ব্যাপারে কী বলে ইসলামে?
টাকার বিনিময়ে টাকা বেশ-কম করে কেনাবেচাকে নাজায়েজ বলেছেন আলেমরা। যেমন : ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। তাই এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়। এ জন্য আলেমরা নতুন টাকা কেনাবেচাকে সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেন। তাই এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত হওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবে না।
তবে অনেক উলামায়ে কেরাম অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহের পদ্ধতিকে জায়েজ বলেন। একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। এ জন্য শর্ত হলো, স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়।
কাগজের নোট যেহেতু পণ্য নয়, ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। এখানে অতিরিক্ত অংশটি বা লভ্যাংশটি সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার: ৫/১৭১-১৭২; বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা: ১/১৬৩)
একই দেশের মুদ্রা কম-বেশি করে বিক্রি করলে ওই ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ হবে না। (হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা: ০৩/৮৫; মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন: ০২/৬৫-৬৬; শারহু মাআনিল আসার: ৫৫৫৪; সুনান দারু কুতনি: ৩০৬০)
তবে, ছেঁড়া-ফাটা টাকা দিয়ে ভালো টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগ অবস্থায় (যেমন ব্যাংক বন্ধ, টাকাও দরকার ইত্যাদি) বদলকারীর পরিশ্রম ও ডাক খরচ বাবদ কিছু টাকা বেশি নেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, ছলনার আশ্রয় ছাড়া স্পষ্টভাবে ‘বাবত’ উল্লেখ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন নোট টাকার বাজারে ছাড়ে। তবে নতুন নোট সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার অনেকের পক্ষে অফিস সময়ে নতুন নোট সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। তাই অনেকে সুবিধাজনক সময়ে ঝামেলাহীনভাবে অস্থায়ী দোকানগুলো থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করে থাকেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।